মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ ৩ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫
ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে স্কুলছাত্রীকে হত্যা, অতঃপর...
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ৭:০৯ PM
কুলাউড়ায় প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে রবিবার (১৫ জুন) রাতে ভিকটিমের প্রতিবেশী মো. জুনেল মিয়াকে (৩৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

তার স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাণ্ডের আশপাশের এলাকা থেকে ভিকটিমের বোরকা, স্কুলব্যাগ, বই এবং একটি জুতা উদ্ধার করে পুলিশ। আজ সোমবার (১৬ জুন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

পুলিশ জানায়, গত ১২ জুন সকাল ৭টার দিকে পাশের সিংগুর গ্রামে প্রাইভেট পড়তে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি নাফিস্তা জান্নাত আনজুম (১৫)। তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ঘটনার দুই দিন পর, ১৪ জুন বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে বাড়ির পাশের একটি ছড়ার পাশে দুর্গন্ধ পেয়ে তার ভাই ও মামা অর্ধগলিত মরদেহটি খুঁজে পান। পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায় এবং পরদিন একটি হত্যা মামলা রুজু করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন, কুলাউড়া থানার ওসি গোলাম আপছার এবং পুলিশ পরিদর্শক সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। দ্রুত সময়ের মধ্যে রহস্য উদঘাটনে গঠন করা হয় কয়েকটি বিশেষ টিম। তদন্ত চলাকালে ছড়ার পাশের ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় নাফিস্তার স্কুলব্যাগ, বই এবং একটি জুতা।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয়দের বক্তব্য, আলামত উদ্ধারের স্থান এবং নারীসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে জুনেল মিয়ার ওপর সন্দেহ গড়ে ওঠে। মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে দেখা যায়, সম্প্রতি তিনি একাধিক পর্নো ওয়েবসাইট ব্রাউজ করেছেন— এটা পুলিশের সন্দেহ আরও গভীর করে। পরে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রাত ১২টার দিকে পুলিশের সামনে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে জুনেল।

পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে জুনেল জানান, স্কুলে যাওয়া-আসার পথে দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিমের প্রতি কুদৃষ্টিতে তাকিয়ে আসছিল তিনি। ঘটনার দিন ১২ জুন সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে প্রাইভেট শেষে আনজুম বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় জুনেল মিয়া তার পিছু নেন এবং কথা বলার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে মেয়েটি তাকে এড়িয়ে যেতে চাইলে তিনি পেছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে জড়িয়ে ধরেন। ভিকটিম চিৎকার করলে হাত চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জুনেল।

মরদেহটি কিরিম শাহ মাজার এলাকার পাশে ছড়ার পাড়ের ঝোপে ফেলে দেওয়া হয়। ভিকটিমের বোরকা ফেলে দেওয়া হয় মাজারসংলগ্ন একটি পারিবারিক কবরস্থানের সীমানায়, আর স্কুলব্যাগ ও জুতা ঝোপে ফেলে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তারের পর আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাতেই পুলিশ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বোরকাটি উদ্ধার করে। 
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত