গাজীপুরের শ্রীপুরে ঈদ বোনাস, বাৎসরিক লভ্যাংশের পার্সেন্টেইজ বাড়ানো, জোর করে শ্রমিক ছাঁটাই, হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি, ঈদ ছুটি বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে।
দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চার ঘন্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে। এতে সড়কের উভয় পাশে ১০ কিলো মিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এতে সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও বাস চালকদের দুর্বোগে পড়তে হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) শ্রীপুর পৌরসভার গিলারচালা এলাকায় প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকরা আন্দোলন করে।
এসময় শ্রমিকেরা কারখানার ভিতরে থাকা একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। তাদের দাবী কারখানার প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় মালিকের ভাড়াটিয়া বহিরাগত লোকজন ভিতরে প্রবেশ করে শ্রমিকদের মারধর করলে ৫ জন শ্রমকি আহত হলেও তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদেরকে সহকর্মীরা স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। মহাসড়ক অবরোধ করে তারা বেশ কয়েকটি যানবাহনের জানালার গ্লাস ভাংচুর করে।
কোয়ালিটি সকশনের মাঈনুদ্দিন, ওয়ারিং সেকশনের অপারেটর সাবুর রহমান এবং উইভিং সেকশনের ঈমন মিয়া জানান, কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের কাছ থেকে জোর করে অব্যাহতি পত্রে (রিজাইন লেটারে) স্বাক্ষর নিয়ে ছাঁটাই করে। এছাড়া ঈদে মাত্র তিন দিনে ছুটি দেয়, বাৎসরিক লভ্যাংশের যে টাকা দেয় সেটা তুলনামুলক কম। আমরা আমাদের দাবীগুলো নিয়ে একাধিকবার কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করলেও তারা কোন সমাধান দিতে পারেননি।
শ্রমিকেরা আরো জানায়, বাৎসরিক লভ্যাংশের ৫ শতাংশ হিসেবে পেয়ে থাকি। কিন্তু বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে পার্সেন্টেজ বৃদ্ধির দাবি জানালে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সাথে খারাপ আচরণ কররে। তাদের এক মাসের বকেয়া বেতন, ঈদুল আজহার তিন দিনের হাজিরা বোনাস পরিশোধের দাবি জানান। আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে অন্দোলন করছি। বারবার আমরা দাবী জানালেও কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবিগুলোর নিয়ে বসেও না, আলোচনাও করে না। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে ঠেকে গেছে। আরোদালন ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।
প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল মিলস্ লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মাইনুদ্দিন বলেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার আগেই তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান কওে অবরোধ করে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ শ্রীপুর ইরয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর আব্দুন নূর বলেন, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় মহাসড়ক থেকে সড়িয়ে নেয়।
বিকেল সাড়ে ৫টায় প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল মিলের লিমিেিটডরে মালিক সাখাওয়াত হোসেন শ্রমিকদের দাবী মেনে নেওয়ার আশ^াস দিলে তারা শান্ত হয়।