মঙ্গলবার ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ৩০ আশ্বিন ১৪৩১
মঙ্গলবার ১৫ অক্টোবর ২০২৪
দেশের সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:৩১ PM আপডেট: ০১.০৯.২০২৪ ৩:৫৬ PM
ঢামেকের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে হামলা ও জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তার এবং বিচারের দাবিসহ আরও কয়েকটি দাবিতে সারা দেশে সরকারি–বেসরকারি সব হাসপাতালে শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। 

রোববার দুপুরে ঢামেক হাসপাতালে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে ঢামেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বলেন, কর্তৃপক্ষ দায়ীদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার, চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় স্বাস্থ্য পুলিশ গঠনের ঘোষণা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাশের দাবিতে সারা দেশে সব হাসপাতালে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ (হাসপাতালে সেবা বন্ধ) ঘোষণা করা হলো। 

এর আগে সকাল থেকেই ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগসহ সব বিভাগে সেবা বন্ধ রেখেছেন আন্দোলনকারী ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে যোগ দিয়েছেন নিয়মিত চিকিৎসকরাও। গতকাল শনিবার আজ রাত ৮টা থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও হঠাৎ করে সকাল থেকেই সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা।

চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে হাসপাতাল। রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা। কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে। কেউ অপেক্ষা করছেন সেবা পাওয়ার আশায়।
কর্মবিরতিতে যাওয়া ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে বৈঠকে বসেন হাসপাতালটির পরিচালক। চিকিৎসা সেবা চালানোর আহ্বান জানান তিনি। তবে সেই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। সমস্বরে চিকিৎসকরা বলে ওঠেন, চিকিৎসা দেব না। এরপর পরিচালক উঠে যান।

গতকাল চিকিৎসাধীন এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘিরে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে হামলা ও আরেক ঘটনায় জরুরি বিভাগে ভাঙচুর নিয়ে শনিবার থেকে আন্দোলনে নেমেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

আজ রোববার রাতের মধ্যে চিকিৎসকদের ওপর হামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম ছিল ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। আর জরুরি বিভাগে ভাঙচুর নিয়েও নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন তারা। আলটিমেটাম অনুযায়ী রাত ৮টা থেকে ছিল কর্মবিরতিতে যাওয়ার কর্মসূচি। তবে দুই ঘটনা মিলিয়ে তার আগেই সকাল থেকে ঘোষণা ছাড়াই সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুরুতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নামলেও এক পর্যায়ে নিয়মিত চিকিৎসকরাও এতে যোগ দেন।

শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রথম ঘটনার সূত্রপাত। অবহেলায় তাঁর মৃত্যু হয় অভিযোগ তুলে দীপ্তর ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা ঢামেকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের মারপিট করেন। এ সময় আহত হন নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ইমরান, মাশরাফি ও জুবায়ের।

বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্য সেবাকর্মীদের মধ্যে ভয়, আতংক ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে এবং স্বাভাবিক নার্সিংসেবা তথা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ অবস্থায় কাঙ্ক্ষিত নার্সিংসেবা প্রদানের লক্ষ্যে চিকিৎসকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তারা চার দফা দাবি পেশ করে। দাবিগুলো হলো:

১. হাসপাতালের মতো একটি জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যে সব ব্যক্তি বা কুচক্রী মহল এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে চিহ্নিত করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

২. নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অবিলম্বে দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য পুলিশের (আর্মড ফোর্স) মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৩. নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে হাসপাতালে রোগীর ভিজিটর (ভিজিটর কার্ডধারী) ব্যতীত বহিরাগত ব্যক্তি বা মহল কোনোভাবেই হাসপাতালের ভেতর প্রবেশ করতে পারবে না, স্বাস্থ্য পুলিশের (আর্মড ফোর্স) মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

8. হাসপাতালে রোগীর সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অসঙ্গতি/অবহেলা পরিলক্ষিত হলে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ প্রদানের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা যেতে পারে। তবে, কোনোভাবেই আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক আউয়াল সেন্টার (লেভেল ১২), ৩৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত