বাংলা, বিহার এবং ওড়িশার নবাব আলীবর্দী খানের বড় মেয়ে ঘষেটি বেগম। ঘসেটি বেগম উত্তরাধিকার সূত্রে তার স্বামীর কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে ধন সম্পদ পান। তিনি ছিলেন সেই সময়ের বাংলার অন্যতম প্রভাবশালী নারী। সম্পর্কে তিনি ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালা। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের কাছে পরাজিত হন সিরাজউদ্দৌলা এবং ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সূচিত হয়। সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মীর জাফরকে সাহায্য করেছিলেন ঘসেটি বেগম। এজন্য ঘসেটির বেগমের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা জুড়ে দিয়েছেন অনেকে। কিন্তু এরকমও দাবি উঠেছে যে, নিজের অজান্তেই তিনি এই ষড়যন্ত্রের শিকার হন।
টলিপাড়ায় সেই ঘসেটি বেগমের বায়োপিক তৈরির পরিকল্পনা শুরু করেছে কলকাতার পরিচালক অর্জুন দত্ত। আর ঘসেটি বেগম চরিত্রে কে অভিনয় করবেন?
আর তাতে প্রধান চরিত্রে এগিয়ে আছেন ঢাকার জয়া আহসান আর কলকাতার স্বস্তিকা মুখার্জি। তবে এর আগে অর্জুন দত্তের ‘গুলদস্তা’ এবং ‘শ্রীমতী’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন স্বস্তিকা মুখার্জি। তাই টলিপাড়ার একটি সূত্র বলছেন— ‘এই চরিত্রের জন্য পরিচালকের পছন্দ স্বস্তিকা।’ অন্য একটি সূত্র বলছেন, ‘সিনেমার বিষয় ভাবনার কথা চিন্তা করে এ প্রস্তাব গিয়েছে জয়া আহসানের কাছে। আবার এই চরিত্রে পাওলি দামের নামও শোনা যাচ্ছে। তবে গুঞ্জনের পাল্লা ভারী জয়া আহসানের দিকেই। তাকেই নাকি বেশি মানাবে এই চরিত্রে। কারণ সিনেমাটির সময়কাল এবং তৎকালীন বাংলার নবাবি পোশাকের সঙ্গে জয়ার লুক বেশি মানানসই বলে মনে করছেন নির্মাতারা। যদিও শেষ পর্যন্ত কাকে ঘসেটির চরিত্রে দেখা যাবে তা এখনও চূড়ান্ত নয়।
একটি সূত্র ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, এই বায়োপিক নিয়ে দীর্ঘ দিন গবেষণা করেছেন পরিচালক। তবে ছবির বাজেট নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় সময় বেশি লাগছে। কয়েক বছর আগে সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে সিনেমাটি তৈরির কথা জানিয়েছিলেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও বাজেট ছিল অন্তরায়। আবার সম্প্রতি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি পলাশির যুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করছেন এবং সিরাজউদ্দৌলার চরিত্রে তাঁর প্রথম পছন্দ অভিনেতা দেব। সূত্রের খবর, সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে ছবি মানে সেখানে ঘসেটির উপস্থিতি থাকবেই। তাই অর্জুন তাঁর ছবির ঘোষণা করতে আর দেরি করতে চাইছেন না।
এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষ থেকে অর্জুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কথার শুরুতে ঘসেটি বেগমের চরিত্র নিয়ে সিনেমা নির্মাণের বিষয়টি অস্বীকার করেন। অর্জুন দত্ত বলেন, ‘এ রকম কোনো সিনেমা নিয়ে এখনই ভাবছি না।’
তবে আলাপে আলাপে এ পরিচালক জানান, ঘসেটি বেগম বাংলার ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। নিজের অজান্তেই উনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন। অর্জুনের কথায়, ‘চরিত্রটা নিয়ে এক সময় পড়াশোনা করেছি। নারী মনস্তত্ত্ব নিয়ে কাজ করতে সব সময়ই পছন্দ করি। কখনো সুযোগ পেলে ঘসেটি বেগমকে নিয়ে সিনেমা করতে পারি।’
এদিকে জয়া আহসান এখন কলকাতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ছবির প্রমোশনে। ২ জুন পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে এটি।
-বাবু/ সাদরিনা