রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪ ২১ আশ্বিন ১৪৩১
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
শমশেরনগরে রেলপথের উপর পশুর হাট, কাউকে তোয়াক্কা করছে না ইজারাদার
ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের!
আলমগীর হোসেন কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩, ১:৫১ PM আপডেট: ০৮.০৬.২০২৩ ৩:২৪ PM

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর রেলস্টেশনের দক্ষিণাংশে রেলপথের উপরেই সপ্তাহের রবি ও বুধবার বসে পশুর হাট। এতে ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি ও যেকোন মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। তবে পশুর হাট সরানোর বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকাস্থ বিভাগীয় প্রকৌশলী/২ এর কাছে চিঠি দিয়েছেন শ্রীমঙ্গলস্থ উর্ধ্বতন উপসহকারী পথ। স্টেশন মাষ্টারের আপত্তি ও পশুর হাট বন্ধ রাখার ইউএনও’র নির্দেশনাও তোয়াক্কা না করে বাজার ইজারাদার নিয়মিত হাট পরিচালনা করছেন।

বুধবার বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, শমসেরনগরের ভানুগাছগামী আউটার ও স্টেশনের সন্নিকটে রেললাইনে বসছে পশুর হাট। রেললাইনের সিগন্যাল ঘেঁষে অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ইজারাদার। বিক্রেতারা সিগন্যাল, রেলের ¯িøপার বা পয়েন্টের চাবির সঙ্গে গরু বেঁধে বিক্রি করছেন। অনেকে গরু, ছাগল নিয়ে রেললাইনের ওপরেই বসে থাকছেন। ট্রেন এলে শুরু হচ্ছে ছুটোছুটি। এতে যেকোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ও ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন।জানা যায়, শ্রীমঙ্গল সেকশনে শমশেরনগর স্টেশন এলাকায় কি.মি. ৩০৭/৭-৮ এ প্রতি রবিবার ও বুধবার স্থানীয় লোকজন ও বাজার কমিটির সমম্বয়ে গরু বেচাকেনার জন্য গরুর হাট পরিচালিত হয়।

স্টেশন এলাকার বাউন্ডারী ও সীমানা প্রাচীর না থাকায় বাজারে ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য নিয়ে আসা গরু রেল লাইনের উপর অবস্থান করে। রেল লাইনে গরুর হাট বসার জন্য রেল লাইনে দেওয়া পাথর সমূহ রেল লাইন হতে সরে যাচ্ছে এবং ট্রেন চলাচলের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। রেল পথের নিরাপত্তার স্বার্থে গরুর হাট না বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকাস্থ বিভাগীয় প্রকৌশলী/২ কে গত ২৩মে তারিখে চিঠি প্রদান করেন শ্রীমঙ্গলস্থ উর্ধ্বতন উপসহকারী প্রখৌশলী/পথ।

বিক্রেতা রফিক মিয়া ও ক্রেতা রবিউল আলম বলেন, রেললাইনের উপর খুবই ঝুঁকিপূর্ণ পশুর হাট। তবে আমাদের করার কি আছে। ইজারাদার ও পশুর হাট আয়োজকরা এখানে স্থান দিয়েছেন, ঝুঁকি জেনেও কেউ কিছু বলছেন না। তাছাড়া ট্রেন আসার শব্দ সব সময় শুনাও যায় না। এখান থেকে গরু বেচাকেনা সরিয়ে দেওয়া উচিত বলে তারা দাবি করেন। অভিযোগ বিষয়ে শমসেরনগর বাজার ইজারাদার মো. আশাহিদ মিয়া বলেন, জায়গার অভাবে রেললাইনের ওপরে বা রেলের জায়গায় গরুর হাট বসিয়েছি। তবে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা নজরদারি রাখি। ট্রেন এলেই সবাইকে সরিয়ে দেই। তবে পশুর হাট বন্ধ থাকার বিষয়ে ইউএনও’র কাছ থেকে তিনি কোন নির্দেশনা পাননি বলে দাবি করেন।

শমসেরনগর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার জামাল হোসেন বলেন, এখানে গরুর বাজার না করার জন্য বার বার নিষেধ করেছি। তাছাড়া উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তারপরও গরুর বাজার বসানো হয়। শমসেরনগর বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান বলেন, আমরাও ইজারাদারকে নিষেধ করেছি যাতে রেললাইনের উপরে পশু নিয়ে কেউ না যায়। শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ বলেন, পশুর হাট করার মতো কোন জায়গাও না থাকার কারণে এখানে হাট বসে। তাছাড়া উপজেলা পরিষদ থেকে লিজ দেয়া হয়। জায়গা নির্ধারণ হওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দীন বলেন, রেলপথের উপর ঝুঁকিপূর্ণ পশুর হাট আপাতত বন্ধ থাকার জন্য বলা হয়েছিল। তারপরও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে রেলওয়ের শ্রীমঙ্গলস্থ উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. ফিরোজ গোলদার জানান, বিষয়টি অবগত হয়ে আমার দায় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি প্রেরণ করেছি। ভবিষ্যতে কখনো যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে যেন আমাকে দায়ী করতে না পারে।

-বাবু/এ.এস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক আউয়াল সেন্টার (লেভেল ১২), ৩৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত