<
  ঢাকা    বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩
বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩
বিএনপির সংবিধান লঙ্ঘন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি
এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু
প্রকাশ: শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩, ৭:০৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই- বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের মূলশক্তি ছিল সত্তরের নির্বাচন। আওয়ামী লীগ সবসময়ই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার রাজনীতি করেছে, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে- এমন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছে, বাঙালি জাতি রক্ত দিয়েছে। কাজেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখতে আওয়ামী সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছ তার জন্মলগ্ন থেকেই।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তযুদ্ধকালীন আওয়ামী লীগের নেতারা জানতেন- পাকিস্তানি শাসকরা বাঙালির হাতে ক্ষমতা কোনোভাবেই হস্তান্তর করবে না। তবুও, বিদ্যমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি সম্মান রেখেই সত্তরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খানের সৃষ্ট কমিশনের ও রাষ্ট্রযন্ত্রের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এক নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করে। 

আমার প্রশ্ন- সেসময় পাকিস্তানের মতো একটা অগণতান্ত্রিক দেশে, যে দেশে এখন পর্যন্ত গণতন্ত্র সুদূর পরাহত, সেখানে সেই সময় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয় লাভ করে। কাজেই ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখা। 

সত্তরের নির্বাচনে সবকিছু পাক শাসকের নিয়ন্ত্রণে থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এ সময় পাকিস্তানে কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল না, কিংবা আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিও তোলেন। কাজেই বিএনপিকে বুঝতে হবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়, যেমন সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খানের সৃষ্ট কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীনের পথকে আরো তরান্বিত করতে সক্ষম হয়।

দুই.
আমাদের রাজনীতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যদি আবর্তিত হত, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের যদি নির্মমভাবে হত্যা না করা হত, তাহলে আজকের রাজনীতিতে এত বড় সংকট তৈরি হত না, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নড়বড়ে হত না। তাছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর পরেও মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও কটূক্তি শোনা যায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি, এ চেতনা সুসংহত করে রাজনীতির ভিত তৈরি করতে পারেনি; তাই স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতির মূলেই সংকট রয়ে গেছে। কাজেই আমার প্রশ্ন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর পরেও আমাদের রাজনীতির মূল দর্শন মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনা রাজনীতিতে সুসংহত হয়নি। তাহলে কীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্পিরিট এত অল্প সময়ে আমাদের রাজনীতিতে সুসংহত হবে?
বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা

বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা










বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাহাত্তরের সংবিধানে এ চার মূলনীতি সন্নিবেশিত হয়। এছাড়া আমাদের সংবিধানে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছেÑ কীভাবে প্রজাতন্ত্রের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, কোন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন পরিচালনার করবে। সংবিধানের ১১৮ নম্বর অনুচ্ছেদে স্পষ্ট উল্লেখ আছে।

কাজেই আমার প্রশ্ন হল- আমাদের সংবিধানে রাষ্ট পরিচালনার মূলনীতিতে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার কথা স্পষ্ট উল্লেখ আছে, নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন ও এ প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলির কথাও পরিষ্কার উল্লেখ আছে। তবুও কেন রাষ্ট পরিচালনার মূলনীতি ও নির্বাচন পরিচালনার সাংবিধানিক সংস্থা কেন সুসংহত হয়নি; কীভাবে আমাদের এ রাষ্ট্রব্যবস্থার ফান্ডামেন্টালস নড়বড়ে হল। এ প্রশ্নের উত্তর সহজ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা এবং জাতীয় চার নেতাকে কারাভ্যন্তরে হত্যার মাধ্যমে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিকে হত্যা করা হয় এবং এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসন চালু হয়; গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দেশ চালায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি। ফলে আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা সুসংহত হয়নি, গণতান্ত্রিক সংস্থা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। কাজেই আমাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা হত্যার জন্য মূলত দায়ী অবৈধ ক্ষমতা দখলদারিরা। সেক্ষেত্রে সেনা ছাউনিতে অবৈধভাবে জন্ম নেওয়া বিএনপি ও জাতীয় পার্টি আমাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা কলুষিত করার জন্য পুরোপুরি দায়ী।

তিন.
আমাদের সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সন্নিবেশিত হয়। কিন্তু শুরুতেই বিএনপি এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে কলুষিত করে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে অনস্বীকার্যভাবেই নষ্ট করে। যদিও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নির্বাচনের মূল দায়িত্ব পালন করে না, মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হাতে; শুধু কমিশনকে সহায়তা করা ছিল এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজ। তারপরেও আমাদের সংবিধানে এ ব্যবস্থা সন্নিবেশিত হওয়ার পর পরিপক্কতা লাভ করেনি, এ ব্যবস্থাকে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাটাছেঁড়া করেছে, অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা দখলে উদ্বুদ্ধ করেছে,  বিরাজনীতিকরণ পরিস্থতির সৃষ্টি করেছে। কখনোই আমাদের রাজনীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কোনো টেকসই ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে ওঠেনি। 
আলোচিত ওয়ান-ইলেভেন ও কারারুদ্ধ শেখ হাসিনা

আলোচিত ওয়ান-ইলেভেন ও কারারুদ্ধ শেখ হাসিনা









ওয়ান-ইলেভেনের মতো গভীর সংকট সৃষ্টি করে দেশকে বিরাজনীতিকরণের দিকে ঠেলে দিয়েছে এ ব্যবস্থা।  এ ব্যবস্থা কখনোই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করতে পারেনি; বরং অনাস্থা ও অবিশ্বাস তৈরি করেছে দলগুলোর মধ্যে।

তাছাড়া তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা চালুর ফলে আমাদের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনও সুসংহত ও শক্তিশালী হয়নি। যদিও নির্বাচন কমিশনের পরিকাঠামো সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সন্নিবেশিত হওয়ার অনেক আগেই সন্নিবেশিত হয়েছে। পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে- কীভাবে স্বৈরশাসকরা গণতন্ত্র ও নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছে।

চার.
আসুন বাংলাদেশ গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা নিয়ে কারা কীভাবে সহনশীল আচরণ করছে, কারা অসহনশীল ও সহিংস আচরণ করছে- এ নিয়ে একটি নির্মোহ বিশ্লষণ জরুরি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দ্বিধারার রাজনীতিতে কারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে? দেশ স্বাধীনের সাড়ে তিন বছেরর মধ্যে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যা এবং  ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর গণতন্ত্রে চিরস্থায়ী পেরেক বসিয়ে স্বৈরশাসক জিয়া ও এরশাদ প্রায় পনের বছর অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশর ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখে, ফলে একদিকে দেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা হয়নি।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগসহ যেসব রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল থেকে রাজনীতি করত- সেসব দলের নেতাকর্মীদের উপর জুলুম-নির্যাতনে দেশে সুস্থ ও স্বাভাবিক ধারার রাজনীতি সৃষ্টি হয়নি। কাজেই বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সম্পূর্ণ অনুপস্থিত রাখা হয়। সুতরাং ইতিহাসের পরম্পরা পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়- বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এদেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ  ও নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য পুরোপুরি দায়ী। মহানান্য সুপ্রিমকোর্টও জিয়া ও এরশাদের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। 
স্বৈরাচার এরশাদের পতন

স্বৈরাচার এরশাদের পতন









নব্বইয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ও একানব্বইয়ে নির্বাচনের পর গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু হলেও গণতন্ত্রের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে বিএনপি। ছিয়ানব্বইতে একতরফা নির্বাচন দিয়ে বিএনপি গণতন্ত্রের বুকে আবার পেরেক বসিয়ে দেয়। এ নির্বাচনে দশ শতাংশের কম ভোট পড়ে। গণতন্ত্র মুক্ত করার জন্য আওয়ামী লীগ অসহযোগ আন্দোলন করে; ফলে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়।

ছিয়ানব্বইতে আবার নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তার মেয়াদ শেষে ২০০১ সালে আবার নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে বিএনপি ক্ষমতা আসে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্মম নির্যাতন ও নিপীড়ন চালায়। 
বিএনপির সংবিধান লঙ্ঘন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি

বিএনপির সংবিধান লঙ্ঘন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি









২০০৪ সালে ২১ আগস্ট  তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালালে সৌভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে গেলেও আইভি রহমানসহ ২৫ নেতাকর্মীকে প্রাণ দিতে হয়। বিএনপির তারেক রহমানের নীলনকশা ও নির্দেশনায় রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। বিএনপির সেই মেয়াদে সারাদেশে একযোগে তেষট্টি জেলায় বোমা হামলা হয়, এ পললভূমি হয়ে ওঠে জঙ্গিদের উর্বর আবাসস্থল। বিএনপির এসব বর্বর আচরণে গণতন্ত্র হত্যা হয়, নির্মূল হয় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জন্ম নেয় পারস্পরিক অনাস্থা ও অবিশ্বাসের।

এদেশে ওয়ান-ইলেভেনের মতো বিরাজনীতিকরণের প্রেক্ষাপট তৈরিতে প্রধান কুশীলব বিএনপি-জামায়াত চক্র। ২০০৬ সালের শেষ ভাগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ক্ষমতালোভী মনোভাবের কারণে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ গণমানুষের আনোদালন-সংগ্রাম। এর প্রেক্ষিতে বিএনপির মনোনীত রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ জরুরি অবস্থা জারি করে। একইসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেন তিনি। বাতিল করা হয় ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন। 
বিএনপির সংবিধান লঙ্ঘন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি

বিএনপির সংবিধান লঙ্ঘন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি









এরপর সেনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত হয় নতুন ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’, যার প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফখরুদ্দীন আহমদ। সেনাসমর্থিত  এ সরকার ১১ জানুয়ারি ক্ষমতার পালাবদলের পর জরুরি ক্ষমতার আওতায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে। শুরুতে দেশের মানুষ সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সমর্থন করলেও এক সময় তা কমে আসে এবং নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি বাড়তে থাকে।

সেনাসমর্থিত এ সরকারের আমলে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দমন-পীড়ন করে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া শুরু করে। এই বিরাজনীতিকরণের মধ্যে দিয়ে আমাদের দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার পুরোপুরি ধ্বংস হয় এবং অতল গহ্বরে চলে যায়। সর্বোপরি মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের রায়ে এ অসাংবিধানিক ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যায়।

পাঁচ.
রাজনীতি ও নির্বাচন ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা আস্থা ও  সহিষ্ণুতার অভাব ক্রমশও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের গণতন্ত্রের বিকাশ ও নির্বাচন ব্যবস্থা কেমন হবে- এ নিয়ে সংলাপ হতে পারে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে হতে পারে। কিন্তু বিএনপি বরাবরই এ পথে না হেঁটে সবসময়ই উল্টো পথে হেঁটেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তদকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে জননেত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আমন্ত্রণ জানালে, তা তিনি দাম্ভিকভাবে প্রত্যাখান করেন। 

এর পরপরই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা নির্বাচন বানচালের জন্য সারাদেশে সহিংসতা ও অগ্নিসন্ত্রাস ছড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা আলাপ-আলোপচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে না হেঁটে বিদেশি লবিস্ট নিয়োগ করে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে এবং এ ষড়যন্ত্র এখন পর্যন্ত অব্যাহত রাখছে।
বিএনপির সংবিধান লঙ্ঘন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি

বিএনপির সংবিধান লঙ্ঘন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি









দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হরতাল-অবরোধ দিচ্ছে, বাস পোড়াচ্ছে, জনজীবন বিপর্যস্ত করছে, পুলিশ-সাংবাদিক হত্যা করছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আবারও তারা সহিংস হয়ে উঠছে, অগণতান্ত্রিক পথে হাঁটছে। সংবিধানের প্রতি ন্যূনতম সম্মান দেখাচ্ছে না, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখাচ্ছে না, নির্বাচন কমিশনের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না, গণতান্ত্রিক পথে হাঁটছে না, সংবধিান মানছে না। 

গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় বিএনপি বরাবরই ষড়যন্ত্র ও নীলনকশার রাজনীতি করছে। এ নীলনকশার পথে হাঁটার ফলে বিএনপির রাজনীতি নিয়ে এদেশের মানুষ প্রশ্ন তুলেছে। এ প্রশ্নের জবাব এদেশের জনগণ আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে দিবে- তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

লেখক : আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান,  শের-ই-বাংলা ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সাউথ বেঙ্গল গ্রুপ কর্তৃক প্রকাশিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. আশরাফ আলী
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : রফিকুল ইসলাম রতন
আউয়াল সেন্টার (লেভেল ১২), ৩৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন : ০২-৪৮৮১১০৬১-৩, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত