দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে রাজশাহীতে চার প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আর আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ছয় জন। সবমিলিয়ে ভোটের মাঠে লড়াই করবেন ৩৮ জন। রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে এ তথ্য জানিয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহম্মেদ।
প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা চারজন হলেন- রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান, রাজশাহী-৫ আসনে জাকের পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম ও রাজশাহী-৬ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী রিপন আলী।
এমপি আয়েন উদ্দিন ও ডা. মনসুর রহমান এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে তারা শেষ পর্যন্ত নৌকাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে গেলেন। জাকের পার্টি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সব আসনের প্রার্থী প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে। তাই দলটির রাজশাহীর দুই প্রার্থীও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ জানান, যাচাই-বাছাইয়ে রাজশাহীর ছয়টি আসনের ২২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিলেন তিনি। এর বিরুদ্ধে আপিল করে ছয় প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তারা হলেন- রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা (মাহিয়া মাহি), রাজশাহী-৩ আসনের মুক্তিজোটের প্রার্থী এনামুল হক, রাজশাহী-৪ আসনের এনপিপির প্রার্থী জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল হোসেন, রাজশাহী-৫ আসনের বিএসপির প্রার্থী আলতাফ হোসেন মোল্লা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান।
রিটার্নিং কর্মকর্তার হিসাবে, রাজশাহীতে এখন বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৩৮। এর মধ্যে রাজশাহী-২ আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশাকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে চিঠি দিয়েছে ১৪ দলীয় জোট। তাই প্রতীক বরাদ্দের দিন ফজলে হোসেন বাদশাকে নৌকা দেওয়া হবে। তখন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের প্রার্থিতা বাতিল হবে।
আপিলের মাধ্যমে ছয় প্রার্থী প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার কথা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানালেও রাজশাহী-১ আসনে আরেক প্রার্থীর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি। এ আসনের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী রবিবার উচ্চ আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে এ সংক্রান্ত কোনও কাগজপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তা পাননি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের কোনও আদেশ এখনও তিনি পাননি। আদেশ পেলে প্রার্থীর সংখ্যা একজন বাড়বে। সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এরপরই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে ভোটের লড়াইয়ে আছেন আট জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী, বিএনএমের শামসুজ্জোহা বাবু, স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা (মাহিয়া মাহি), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী বসির আহমেদ, বিএনএফের আল সাদাত, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী জামাল খান দুদু, এনপিপির নুরুন্নেসা ও জাতীয় পার্টির মোহা. শামসুদ্দিন।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনে মোট ছয় জন ভোটযুদ্ধে আছেন। তারা হলেন-১৪ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, বিএনএম প্রার্থী কামরুল হাসান, জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী ইয়াসির হাবিব বিন আলিফ ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মারুফ শাহরিয়ার।
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে লড়াই করবেন ছয় জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত আসাদুজ্জামান আসাদ, বিএনএমের কে এম মতিউর রহমান মন্টু, জাতীয় পার্টির আবদুস সালাম খান বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী এনামুল হক, বিএনএফের বজলুর রহমান ও এনপিপির সইবুর রহমান।
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে আছেন ছয় প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত আবুল কালাম আজাদ, বর্তমান এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক, এনপিপির জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, জাতীয় পার্টির আবুল তালেব, স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল হোসেন ও বিএনএম প্রার্থী সাইফুল ইসলাম রায়হান।
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনেও প্রার্থী থাকলেন ছয় জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারা, জাতীয় পার্টির আবুল হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবাইদুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আলতাফ হোসেন মোল্লা, বিএনএমের শরিফুল ইসলাম ও গণফ্রন্টের মখলেসুর রহমান।
রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনেও প্রার্থী ছয় জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত শাহরিয়ার আলম, বিএনএম প্রার্থী আবদুস সামাদ, জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন রিন্টু, সাবেক এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক, এনপিপির মহসিন আলী ও জাসদের প্রার্থী জুলফিকার মান্নান জামী।