মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
মুক্তাগাছায় প্রাচীন কালিমন্দির দখলের প্রতিবাদে মানবন্ধন
ময়মনসিংহ ব্যুরো
প্রকাশ: সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৩:৪৩ PM
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় দেড় শতাধিক বছরের প্রাচীন কালিমন্দিরসহ জমি ও শ্মশানের রাস্তা দখলের প্রতিবাদে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিত পালিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার বড়গ্রামে দখলকৃত মন্দিরের সামনে সনাতন ধর্মাবলম্বিরা এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

পরে সেখানে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচি থেকে জানানো হয় জনৈক জাহাঙ্গীর আলম (বাদল পুলিশ) বড়গ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেড় শতাধিক বছরের পূরাতন কালিমন্দিরটির চার পাশে ইটের দেয়াল উঠিয়ে বেদখল করে নিয়েছে। একই সাথে সেখানকার একটি শ্মশান ঘাটে যাবার রাস্তাটিও দখল করে বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ওই এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মন্দিরটিতে তাদের পূজা অর্চনা করতে পারছেন না। পাশাপাশি কেউ মারা গেলে শ্মশানে দাহ করতে মরদেহ নিতে গেলে অনেক পথ ঘুরে অন্যমানুষের ফসলি জমি দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। এতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।  

এসময় কর্মসূচিতে একাত্বতা প্রকাশ করে ২ নং বড়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহান আলী সরকার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মানিক বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যনের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মন্দির কমিটির সভাপতি নিতাই বনিক, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটির নির্বাহী সভাপতি এড. নির্মল চন্দ্র সিংহ, বিভাগীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার সাহা, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মুক্তাগাছা উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. ভবতোষ চন্দ্র কর্মকার, কাজল রায়, লিটন রবী দাস, গোপাল রবী দাস, ডা. পরিতোষ রায় প্রমুখ।

বক্তারা অনতিবিলম্বে মন্দিরের জায়গা ও শ্মশানে যাবার রাস্তা উদ্ধার না হলে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা দেন। মন্দির কমিটির সভাপতি নিতাই বনিক বলেন, এক সময় বড়গ্রাম এলাকাটিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আধিক্য ছিল। মন্দিরটি সেই ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর কাছেই শ্মশান ঘাট। সেখানে এ অঞ্চলের হিন্দুদের মরদেহ দাহ করা হয়। অন্যগ্রাম থেকে এসে জাহাঙ্গীর আলম বাদল পুলিশ কিছু জায়গা কিনে সেখানে বাড়ি করেন। এরপর সেই শ্মশানে যাবার রাস্তা বন্ধ করে দেন। পরে প্রথমে মন্দিরের জায়গা এবং মন্দিরটিসহ চার দিকে ওয়াল করে দখল করে নেন। এখন সেখানে মন্দিরে পূজা করা দূরে থাক সেখানে যাবারই উপায় নেই। মন্দিরের দেয়ালে যে লেখা ছিল সে অংশও কিছুদিন আগে সিমেন্টের প্রলেব দিয়ে মূছে ফেলা হয়েছে। যেকোন সময় মন্দিরটি দখলকারীরা ভেঙ্গে নিঃচিহ্ন করে ফেলতে পারে। তিনি দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহান আলী সরকার বলেন, তিনি বার বার জায়গা মেপে মন্দিরের স্থান ও শ্মশানের রাস্তার জায়গা নির্ধারণ করে যার যার অংশ বুঝিয়ে দেবার চেষ্টায় উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। দখলদার বাদল সব সময় নানা টালবাহা করে অসহযোগিতা করেছেন। পুলিশের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বাদল নিজের প্রভাব খাটিয়ে জোর পূর্বক প্রথমে শ্মশানে যাবার রাস্তা ও পরে মন্দিরটিসহ মন্দিরের জমি দেখল করে চার পাশে ওয়াল উঠিয়ে ফেলেছেন। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও, সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও থানা প্রশাসনে একাধিক অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার মিলেনি। তিনি এব্যাপারে উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

দখলের অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বাদলের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ না  করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার ছেলে ফেরদৌস আলম স্বর্ণপ জমির মালিক তার বাবা দাবী করে বলেন, বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে যদি মন্দির কর্তৃপক্ষ পায় তাহলে সেটি ফেরত দেয়া হবে বলে জানান।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত