মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
ভূঞাপুরে গরু হাটের উন্নয়নের লক্ষে আলোচনা সভা
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪, ৫:২৩ PM
বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম গরুর হাট নামে পরিচিত টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী গরুর হাট। 

এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে তেমন একটা আকর্ষণ খুজে পাওয়া যায় না বলে স্থানীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণকারীদের পরামর্শ গ্রহণ ও সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার গোবিন্দাসী গরু হাটের ভেতরে হাট উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ আলোচনা সভায় দূর দূরান্তের ও স্থানীয় পাইকার এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।

হাট উন্নয়ন আলোচনা সভায় গোবিন্দাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী মোঃ ইকরাম উদ্দিন তারা মৃধার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ দুলাল হোসেন চকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোটন, শহীদ জিয়া মহিলা কলেজের প্রভাষক মশিউর রহমান, জাহিদুল ইসলাম জগলু, হাট ইজারাদার মোঃ লিটন মন্ডল সহ বিভিন্ন এলাকার ও স্থানীয় এলাকার পাইকার জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, ১৯৯০ সালের আগে গোবিন্দাসী একটি ছোট বাজার ছিল। চরাঞ্চলের মানুষ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করত। ১৯৯১ সালের পর সপ্তাহে দুইদিন রবিবার ও বৃহস্পতিবার হাট বসানো হয়। ১৯৯৫ সালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী মোঃ ইকরাম উদ্দিন তারা মৃধা গোবিন্দাসী হাটটি ইজারা নেন। ক্রমান্বয়ে হাটটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর গরুর হাট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

আলোচনা সভায় বিভিন্ন ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে তেমন কোন গরুর পাইকার আসছে না। আর স্থানীয় পাইকারদের সুযোগ সুবিধা না থাকায় তারা অন্য হাঁটে গরু বেচাকেনা করছে। হাটের অবস্থা খারাপ হওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছে হাটের সাথে জড়িত মানুষগুলো। প্রতি বছর ইজারা নিয়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে হাট মালিকদের। তবে তারা গরু হাটের সেড গুলোর দুরাবস্থা, সুপেয় পানির সমস্যা, টয়লেট সমস্যা, রওনা ফি, খর, ডোগা ও বিটের টাকা বেশি হওয়ার কারনে পাইকাররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তাছাড়া হোটেল গুলোতে খাবারের মানের চেয়ে দাম বেশি নেয়া সহ বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন। এই সকল সমস্যার সমাধান করে পাইকারদের সুযোগ সুবিধা দেয়া হলে এই হাট আবার দ্বিতীয় বৃহত্তর গরুর হাটটি হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে বলে আশা করেন তারা।

হাট ইজারাদার মোঃ লিটন মন্ডল বলেন- আমি নামে মাত্র হাট মালিক। এই হাটের মালিক হলেন আপনারা। কিভাবে হাটে ক্রেতা বিক্রেতা বাড়ানো যায় সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ দুলাল হোসেন চকদার বলেন- এই হাটটি বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম হাট হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেও স্থানীয় লোকজনের কারনেই আবার নষ্ট হয়ে গেছে।

দীর্ঘ কয়েক বছর ব্যক্তি মালিকানায় ইজারা না দেয়ায় হাটের প্রতি স্থানীয়দের দরদ কমে গেছে। পাইকাররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই এই হাট যাতে আবার আগের মতো জমজমাট হয়ে উঠে, দূর দূরান্তের পাইকার যাতে আবার হাটে আসতে পারে, স্বাধীনভাবে গরু বেচাকেনা করতে পারে, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পায় সে ব্যবস্থা হাট পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন- এই হাটে যদি কোন কিছুর দরকার হয় তাহলে আমাকে বললে চেয়ারম্যান হিসেবে আমি তা বিনা পয়সায় করে দেবো এবং পাইকাররাও সেটা বিনা পয়সায় ভোগ করতে পারবে। তাছাড়া প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে কোন সহযোগিতা লাগলেও তা করা হবে।

গোবিন্দাসী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী মোঃ ইকরাম উদ্দিন তারা মৃধা জানান, তিনিই স্থানীয় লোকদের নিয়ে গোবিন্দাসী গরুর হাট প্রতিষ্ঠা করেন। মাইকিং করে, বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পাইকার ও ক্রেতাদের হাটমুখী করতেন। দীর্ঘদিন ব্যক্তি মালিকানায় ইজারা না দেয়ায় হাটের প্রতি স্থানীয়দের দরদ একেবারে কমে গেছে। তাছাড়া গোবিন্দাসী হাটের আশেপাশে কয়েকটি হাট বসানোর কারণে ব্যাপারীরা তাদের ইচ্ছামতো বিভিন্ন হাটে যায়। স্থানীয় পাইকারদের বুঝিয়ে বলে আশেপাশের হাট গুলোতে যাওয়া বন্ধ করতে পারলে এই হাট আবার আগের মতো জমজমাট হয়ে উঠবে বলে তিনি জানান।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত