মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
তীব্র গরমে হাতপাখার কদর বেড়েছে কেন্দুয়ায়
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪, ১০:৪৩ AM
হাতপাখা তৈরি ও ব্যবহারের ইতিহাস বহু প্রাচীন। হাতপাখার প্রচলন ছিল আজ থেকে প্রায় তিন হাজার বছর আগে গ্রিক-রোমান যুগেও। বৈদ্যুতিক পাখার যুগে অনেকটা হারিয়েই যেতে বসেছে হাতপাখা। তবে দেশে বর্তমানে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে হাতপাখার কদর বেড়েছে। 

লোডশেডিংয়ের ভয়াবহতা ও তীব্র গরমে মানুষের ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শোভা পাচ্ছে হাতপাখা। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর হাতপাখা নাড়িয়ে কিছুটা প্রশান্তি খুঁজছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ।

সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। টানা কয়েক দিনের প্রচণ্ড গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। হাঁস-ফাঁস অবস্থা খেটে খাওয়া মানুষদের। হাঁট-বাজার ও বিপনি বিতানে আসা মানুষদের কাছে কদর বেড়েছে হাতপাখার। তাছাড়া লোডশেডিংয়ে সাধারণ মানুষের ভরসা হাতপাখায়।

সরেজমিনে বুধবার(১মে) সকাল ১১ টায় কেন্দুয়া পৌরসদরের সাউদ পাড়া মোড়ে ভ্রাম্যমাণ হাতপাখা বিক্রেতা রফিক মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, গরম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতপাখার চাহিদা শুরু হয়।

তবে গরম বেশি পড়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার পৌর সদরসহ গ্রামে হাতপাখার কদর বেড়েছে। আকার ও মানভেদে বাঁশের তৈরি এসব পাখা ৪০ টাকা থেকে থেকে ৫০ পিস বিক্রি হচ্ছে।

গার্মেন্টসের কাপড় কিনে বাড়ী যাওয়ার পথে দিগদাইর মোড়ে হাতপাখা কিনার সময় কথা হয় ছবি আক্তারের সঙ্গে। তিনি জানান, একে তো প্রচণ্ড গরম, সেইসঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিং। গার্মেন্টসের পোশাক দেখার আগেই শরীর গরমে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল । তাই ঘনঘন লোডশেডিংয়ের সময় একটু প্রশান্তির তীব্র গরমে আমি বাসার জন্য আজ চারটা হাতপাখা নিয়ে নিলাম।

এদিকে, চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইকারিতে পাখার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে বাঁশের হাতল দিয়ে তৈরি প্রতি পিস হাতপাখার দাম পড়ত ৯ থেকে ১০ টাকা।

এখন সেই হাতপাখা পাইকারি প্রতিপিস ১৫ থেকে ১৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এসব ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা আক্ষেপ করে জানান, প্লাস্টিকের বানানো পাখা ও বিভিন্ন বাহারি ডিজাইনের রেডিমেড পাখা তাদের ব্যবসায় ক্ষতি করেছে।তারা আরো জানান, এবছর গরমের শুরুতেও হাতপাখার চাহিদা এতো ছিল না। হঠাৎ করে গরম বেশি পড়ায় এবং শহরে পোশাক কিনতে আসা মানুষদের কাছে বেশি বিক্রি হচ্ছে এসব পাখা।

এসময় কলেজ শিক্ষক আবু ইউসুফ খান উজ্জ্বলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে অত্যাধিক তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রায় সময় লোডশেডিং পড়তে সাধারণ মানুষদের। অত্যাধিক গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে ধণাঢ্য ব্যক্তিরা সৌরবিদ্যুৎ কিংবা আইপিএস কিনছেন। পক্ষান্তরে সাধারণ মানুষ ব্যবহার করছেন গ্রামীণ হাত পাখা।

এদিকে কোয়ালিটি লারনার্স স্কুলের শিক্ষক নয়ন পাল চৌধুরী জানান, দিন দিন হাত পাখার কারিগররা এপেশা থেকে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। একসময় বিপুল সংখ্যক লোক এপেশায় জড়িত থাকলেও প্লাস্টিক ও রেডিমেড পণ্যের সঙ্গে তাল না মেলাতে পেরে পেশা পরিবর্তন করছে। সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে বাঁশের তৈরি ক্ষুদ্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত