আবারও ভোলার তজুমদ্দিনে এক বিধবা নারীকে ধর্ষণ করার পর ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
গতকাল রোববার তজুমদ্দিন থানায় মামলা করা হয়। এর আগে গত ১০ জুন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার (৭ জুলাই) বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তজুমদ্দিন থানার ওসি মো. মহব্বত খান।
মামলার আসামিরা হলেন- তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁচড়া গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কালাম ফরাজির ছেলে গিয়াস ও আলম চৌধুরীর ছেলে রাসেল।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী নারী জানান, গত ১০ জুন তার বাবা-মা নানা বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ভুক্তভোগী তার ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে ছিলেন। ওইদিন মধ্যরাতে ভুক্তভোগী টয়লেটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হলে আগে থেকে লুকিয়ে থাকা গিয়াস তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং রাসেল ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে।
পরবর্তীতে ওই নারী ঘর থেকে বের হলেই তাকে বাজে ইঙ্গিত করতেন তারা। একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছায় অনৈতিক কর্মকাণ্ডে না জড়ালে তার ভাইকে গাঁজা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা। এতদিন ভুক্তভোগী প্রাণভয়ে ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রাখলেও রোববার বিষয়টি তিনি তার পরিবারকে জানান।
অভিযুক্ত বিএনপি কর্মী গিয়াস উদ্দিন ও মো. রাসেল দুইজনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে জানান, তারা বিএনপি কর্মী। যে নারী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে, ওই নারীর চরিত্র খারাপ। তাদের ফাঁসানোর জন্য ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে বলে দাবি গিয়াস ও রাসেলের।
অপরদিকে ওই নারীর একটি ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে তিনি দাবি করেন, গিয়াস যখন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করছিল, তখন রাসেল মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিল। এভাবে তারা একে অপরের ধর্ষণের সময় ভিডিও করে। অনেক অনুরোধ করার পরও এদের হাত থেকে নিস্তার পাননি। ধর্ষণের বিষয় কাউকে জানালে, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেলিং করেছিল কয়েক দিন।
ভুক্তভোগী নারীর ভাই জানান, ওদের শেল্টারদাতাকে গত শুক্রবার বিএনপির ইউনিয়ন সম্পাদক পদ থেকে ও প্রাথমিক সদস্য থেকে বহিষ্কারের পর আমার বোন মুখ খুলতে সাহস পান। গতকাল রোববার থানায় গিয়ে তারা গিয়াস ও রাসেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
তজুমদ্দিন থানার ওসি মো. মহব্বত খান বলেন, ভুক্তভোগীর ভাই বাদী হয়ে গিয়াস ও রাসেলের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন। অভিযোগ পেয়েই আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। অভিযুক্তদের খুঁজতে পুলিশ টিম অভিযানে নেমেছে।