গাঁজা চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে চায় পাকিস্তান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: বুধবার, ৮ মে, ২০২৪, ৯:১২ PM
পাকিস্তানের করাচির আমির ধেধি নামের এক ব্যবসায়ী ২০১৪ সালে তার মাকে পারকিনসনস রোগের চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যান। তখন সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে মায়ের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে ক্যানাবিডিওল (সিবিডি) বা গাঁজার নির্যাস ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
আমির ধেধি তখনই প্রথমবারের মতো গাঁজার ঔষধি গুণ সম্পর্কে জানতে পারেন। নিজ দেশ পাকিস্তানে ফেরার পর ওই ব্যবসায়ী যুক্তরাষ্ট্র থেকে অল্প পরিমাণ সিবিডি তেলের অর্ডার দেন। অনেকটা তাৎক্ষণিকভাবে এই তেল তার মায়ের স্নায়ুকে শান্ত করতে এবং হাত-পায়ের কাঁপুনি কমাতে সাহায্য করে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সিবিডি তেল
চার বছর আগে তার মা শেষ পর্যন্ত মারা গেলেও ধেধি বলেন, এরপর আমি অন্যদেরও সিবিডি তেল ব্যবহার করতে বলি। আমি আমাদের স্থানীয় কৃষকদের গাঁজার উৎপাদন বাড়াতে এবং এর ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করতে চাই।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সরকার একটি অধ্যাদেশ পাশ করে যা গাঁজা নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (সিসিআরএ) গঠনে সায় দেয়। পাশাপাশি চিকিৎসার স্বার্থে ও শিল্পের উদ্দেশ্যে গাঁজার চাষ, প্রক্রিয়াকরণ, পরিশোধন, উৎপাদন এবং বিক্রয় কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণের অনুমোদন দেয়া হয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিকে।
গাঁজার গুণাগুন
১৩ সদস্যের এই বোর্ডে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে বিভিন্ন সরকারী বিভাগ, গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি থাকবেন। আয়ারল্যান্ডভিত্তিক গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী গাঁজার বাজার ২০২২ সালে বেড়ে হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার। তবে এটি ২০২৭ সালে ব্যাপকহারে বেড়ে দাঁড়াবে ৩,০০০ কোটি ডলারে।
পাকিস্তানে আরও ব্যাপক আকারে শুরু হচ্ছে গাঁজা চাষ
পাকিস্তানের রাষ্ট্রয়ত্ব সংস্থা বিজ্ঞান ও শিল্পবিষয়ক গবেষণা সংস্থার (পিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান সৈয়দ হুসেইন আবিদি জানিয়েছেন, পাকিস্তান শুধুমাত্র গাঁজা চাষ করতে পারবে হারবাল পণ্য হিসেবে যার মাধ্যমে দেশটি বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে এবং এতে দেশটির তলানিতে ঠেকে যাওয়া রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে।
তিনি আরও বলেন, গাঁজার চাষ অবশ্যই জাতিসংঘের আইন যথাযথভাবে মেনেই করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করতে হবে, যেনো কোনোভাবেই এটি (গাঁজা) মাদক বা উপভোগের পণ্য হিসেবে অপব্যবহৃত হবে না।