অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন, লাইন শ্রমিকদের চাকরিতে বিভিন্ন বৈষম্য দূর, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, পে-স্কেল প্রদান, জুলাই ২৩ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনাসহ ৩৫ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ পাগলাপীরে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে তারা পাগলাপীর কার্যালয়ের সামনে এ কর্মবিরতি শুরু করেন। বিকেল ৪ টা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত ছিল।
আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, যতোক্ষণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁদের দাবিদাওয়া বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা দেবেন না, ততোক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন। তবে কর্মবিরতি চলাকালে জরুরি সার্ভিস চালু থাকলেও গ্রাহক পর্যায়ে সব ধরনের সেবা বন্ধ থাকবে।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ পাগলাপীর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া, সদর, মর্ডাণ, হারাগাছ ও সৈয়দপুর সাব-জোনাল অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্লাককার্ড, ব্যানার হাতে পাগলাপীর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে চাকুরি নিয়মিত করার ও পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (আরইবি) বৈষম্যমূলক আচরণ না করার দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
কর্মবিরতি কর্মসূচিতে লাইনম্যান (চুক্তিভিত্তিক) ফয়সাল আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা নানা রকম বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (আরইবি) কাজ হলো বিতরণ ব্যবস্থা করা, আমাদের সমিতির কাজও হলো বিতরণ ব্যবস্থা করা। আমরা মাঠে কাজ করছি। কিন্তু আমাদের নির্দিষ্ট কোনো কর্মঘণ্টা নেই, সপ্তাহিক ছুটি নেই। একই নিয়োগ প্রক্রিয়া একই পদে চাকরি কিন্তু কেউ নিয়মিত, কেউ চুক্তিভিত্তিক, কেউ কাজ নাই মজুরি নাই হিসেবে কাজ করছি। এটা কেমন বৈষম্য বলেন। আমরা চাই সকল বৈষম্য দূর করে নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, সপ্তাহিক ছুটি এবং নিয়মিত চাকুরি আওতায় আমাদের আনা হোক।
আরেক চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী পল্লী বিদ্যুতের লাইন শ্রমিক রনি হাসান আক্ষেপ করে বলেন, এখানে একই পদে ভিন্ন ভিন্ন নিয়োগ দেওয়ায় নানা সমস্যার দেখা দিয়েছি। চুক্তি ভিত্তিক হওয়ায় বিভিন্ন ধরণে ভাতাদি, প্রণোদনা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হলে নিয়মিত ভাইয়েরা যে সুযোগ সুবিধা পান, তাঁর ন্যুনতম আমরা পাই না। কাজ নাই মজুরি নাই হিসেবে যাদের যোগদান আছে, তাদের বেতন বোনাস ভিন্ন অবস্থায় চলে যাচ্ছে। আরইবি’র কাছে একটাই দাবি চুক্তি থেকে মুক্তি চাই, নিয়মিত চাকুরি চাই।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার খুরশিদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুধু অনিয়মিত, চুক্তিভিক্তি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই নয়, অন্যান্যরাও কর্মবিতরতি পালন করছে। তাঁরা আমাকে স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা সেটা আরইবির কাছে পাঠাবো।
কর্মবিরতিতে সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে জিএম খুরশিদ আলম বলেন, আমরা এমার্জেন্সি সাভির্সগুলো চালু রেখেছি। ক্যাশে বিল আদায়, সাবস্টেশনের ডিউটি, গ্রাহকদের অভিযোগ এগুলো চালু রাখছি।