ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি বেশ আগ্রহ সাকিব খানের। কিন্তু পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে সাটুরিয়া রূপালী ব্যাংকের নিচে বাবার সাথে চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়। কাজের ফাঁকে ফাঁকে সে লেখাপড়া করে এবার সে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ পয়েছে।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার এই অদম্য মেধাবী ছাত্রের সাফল্যে খুশি মা বাবা ও শিক্ষক। সবচেয়ে বেশী খুশি হয়েছেন সাকিবের দুঃসময়ে পাশে থাকা সাটুরিয়ার ইউএনও শান্তা রহমান।
সাকিব খান সাটুরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিল। সে জেএসসি ও পিএসসিতেও জিপিএ ৫ পেয়েছে। এবার এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে।
জানা গেছে, সাটুরিয়া বাজারের রূপালী ব্যংকের নিচে চায়ের দোকান করে সংসার চালাতে হয় সাকিবের বাবা মোঃ নজরুল ইসলামকে। এ চায়ের দোকানের আয় দিয়ে পরিবার চালানো তার পক্ষে দুঃস্কর হয়ে পড়ে। সে সময় ছেলে সাকিব খান বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে লেখাপড়া করতে চাই। এতে কমপক্ষে তিনটি প্রাইভেট পড়তে হয়। কিনতে হয় অনেক বই। আমার পক্ষে ছেলের লেখাপড়া করা কষ্টসাধ্য হয়ে পরে।
এ খরবটি সাটুরিয়া ইউএনও শান্তা রহমান জানতে পরে ওই মেধাবী ছাত্র সাকিব খানের সব ধরণের বই কিনে দেন এবং তার খোঁজ খরব রাখতেন।
সাটুরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, সাকিব খানের মনোবল দেখে কখনো মনে হতো না সে হতদরিদ্র। বাবার চায়ের দোকানে চা বিক্রি করে সে এসএসসি পরীক্ষায় ১২০০ নম্বরের মধ্যে ১১৮০ নম্বর পেয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারবে। সাকিব খানের সাফল্যে আমরা গর্বিত। সে যেন তার সাফল্যে ধরে রাখতে পারে এ দোয়া করছি।
সাকিবের স্বপ্ন ফরেন ক্যাডার হওয়ার। সে বলে স্কুল জীবন পাড়ি দিয়ে এবার কলেজ জীবন পাড়ি দিয়ে ফরেন ক্যাডার হবো। উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করব।
সাকিবের এসএসসির ফল শুনে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি চা বিক্রেতা বাবা মোঃ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার ছেলে কঠোর প্ররিশ্রম করে লেখাপড়া করে ফল পেয়েছে। মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা তার সঙ্গে আছে। সেই সাথে ইউএনও স্যার আমার ছেলেকে অনেক সহায়তা করেছেন বলে জানান।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শান্তা রহমান বলেন, শুধু মনোবল আর অদশ্য ইচ্ছাশক্তিই তাকে সাফল্যে এনে দিয়েছে। বইয়ের অভাবে ওই মেধাবী ছাত্র লেখাপড়ার বিঘ্ন ঘটায় আমি খবর পেয়ে তাকে সব ধরণে বই কিনে দেয় এবং সব সময় তার লেখাপড়ার খোঁজ খবর রেখেছি। সে প্রমাণ করে দিয়েছে, ইচ্ছাশক্তি থাকলে সাফল্য অর্জনে কোন বাধাই বাধা নয়।
সাকিব খানকে ঢাকার পাঁচটি ভালোমানের কলেজে ভর্তি হওয়ার সবধরনের সহায়তা করা হবে বলে তিনি জানান। পরে তিনি সাকিবকে তার অফিসে ডেকে মিষ্টিমুখ ও কিছু বই উপহার দেন।