উপকূলীয় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের ১৪ ঘন্টার তাণফবে বলেশ্বর নদের তীরের মানুষ ঘর হারা ও ২৫ কিলোমিটার বেড়ি বাধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রবিবার রাত থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব কাঁচাবাড়ি ঘর বিধ্যস্থসহ বিভিন্ন এলাকার গ্রামীন সড়ক ও মহা সড়কে শতাধিক গাছ উপড়ে পড়ে। এছাড়া বলেশ্বর নদে অস্বাভাবিক জোয়ারে ক্ষেতাছিঁড়া ও কচুবাড়িয়ার দুইটি পয়েন্টের বেড়ি বাধ উপচে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার মৎস্য খামারের অন্তত ২৫০ টি পুকুরসহ ৪০টি মাছের ঘের ও আউশ বিচতলা প্রায় তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে।
এছাড়া বেড়ি বাধের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ২৫ কিলোমটার বেড়িবাঁধ নদের প্লাবনে হুমকির মুখে রয়েছে। এ দিকে পল্লী বিদ্যুতের অন্তত ৪০ টি খুটি ভেঙ্গে গত তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
সরেজমিনে মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নের ক্ষেতাছিড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ভারি বর্ষণে মাছের ঘেরের পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমী ফসল পানিতে তলিয়ে আছে। এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়ছেন হাজারো কৃষক। এ ছাড়া প্রায় ৮ কিলোমিটা গ্রামীন সড়ক ও মহা সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ভাঙ্গন দেখা গেছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝড়ে উপজেলায় পাঁচ সহস্রাধিক কৃষক অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এতে অন্তত হাজার হেক্টর জমির ফসল জলাবদ্ধতায় আছে। এর মধ্যে উপশি বোড়ো ধান ২০০ হেক্টর, আউশ বীজতলা ১৩০ হেক্টর,পান ৫০ হেক্টর, ফল ও শাখসবজি ক্ষেতসহ ৪০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষি দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী সর্বমোট ৪ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষকের কাছে এর ক্ষতির পরিমান দ্বিগুনেরও বেশী।
উপজেলার মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের তোরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মৎস্য খামারের ৪০টি ঘের ও ৯৫০ পুকুরের ডুবে আছে। এছাড়া ১৩০টি নৌকা ও ১৭০টি মাছ ধরা জাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে ২ কোটি ২৮ লক্ষ টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হয়েছে।
সাপলেজা ইউপি চেয়াম্যান মো, মিরাজ মিয়া জানান, কৃষক ও জেলেদের যে ক্ষতি হয়েছে তা খুবই হতাশা জনক। কাচা ঘর বাড়ি হাড়িয়ে নদী পাড়ের মানুষ এখন খোলা আকাসের নিচে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আগাম বন্যা নিয়ে কৃষকের মাঝে সতর্ক করা হয়েছিল তানা হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরও বেড়ে যেত। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষি দেখার জন্য প্রত্যেক উপ-সহকারী কৃৃষি অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।