ময়মনসিংহের ত্রিশালে দশ দিনের ব্যবধানে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করে নিরাপদ সড়কের দাবি জানিয়েছে কয়েকশত এলাকাবাসী। এসময় অবরোধকারীরা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তোফায়েল আকন্দের জানাজা নামাজ মহাসড়কেই পড়েন। এর আগে গত ১ জুন একই দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছিল এলাকাবাসী।
সোমবার সকালে উপজেলার আমিরাবাড়ি ইউনিয়নের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘন্টাব্যাপী এই অবরোধে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
ওইদিন ভোরে ইমাম পরিবহনের একটি বাস ও পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যান একই স্থানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে মহাসড়কেই উল্টে পরে পিক-আপ ভ্যান। এতে আহত হয় কয়েকজন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত আবারও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, মানববন্ধন এবং একই স্থানে সড়ক দুঘর্টনায় নিহত তোফায়েল আকন্দের জানাজা নামাজ পড়ে অবরোধকারীরা।
এসময় তারা মহাসড়কে গাছের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে ঘন্টাব্যাপী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। খরব পেয়ে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামাল হোসেন অপরিকল্পিত পিছ ঢালাই আজকের মধ্যে সরিয়ে নেওয়া হবে এবং দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় গতিরোধক স্থাপনের আশ্বাস দিলে ব্যারিকেট তুলে নেয় এলাকাবাসী। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ সময় এলাকাবাসী ‘বাঁচার মতো বাঁচতে চাই, নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ সহ নানা ধরনের স্লোগান দেয়।বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকাবাসীর সাথে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিত ছিল। তবে এতে অন্য কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
মানববন্ধনে উপস্থিত আরিফুল হক এরশাদ বলেন, 'আজ এ মুহূর্তে মহাসড়ক থেকে এ অপরিকল্পিত পিছ ঢালাই সরিয়ে না নিলে আমরা লাগাতার মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি দিবো। এ অপরিকল্পিত পিছ ঢালাইয়ের কারণে গত চার মাস ধরে এখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কের এ স্থানে অপরিকল্পিত অতিরিক্ত পিছ ঢালাই এর কারণে দ্রুতগামী বাস-ট্রাক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। এবং একটু রোদ- বৃষ্টি হলেই এ স্থানটির পিছ গলে পিছলে হয়ে যায় এবং এখানে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীসহ যানবাহন।'
সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রুবেল মিয়া বলেন, 'এই জায়গায় প্রায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা হয়। আমাদের বাবা-মা এই দুর্ঘটনার জন্যে আতংকিত থাকে। বৃষ্টি কিংবা তীব্র রোদে ঝুঁকির চিন্তা করে আমাদের স্কুলে আসতে দেয় না। এতে আমাদের পড়াশুনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।'
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামাল হোসেন বলেন, 'দ্রুত মহাসড়কের এ স্থানে স্পিডব্রেকার দেওয়া হবে।,
এবিষয়ে ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ মহাসড়কের এ অংশটি পরিদর্শন করে আপাতত তাৎক্ষণিক এখানে দুইটি স্পিড ব্রেকার দেওয়ার স্বীদ্ধান্ত নিয়েছে। যার কাজ অলরেডি শুরু হয়েছে। আশা করি এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে যাবে। এরপরও আমাদের টেকনিক্যাল টিম যাচাই-বাছাই করে আর কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
উল্লেখ্য, গত১ তারিখ রাতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ডে অন্য গাড়ির পিছন থেকে ধাক্কায় তোফায়েল আকন্দ গুরুতর আহত হন পরে ৯ তারিখ চিকিৎসারত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। আজ ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।