উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বর্ষণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর,কালিহাতির যমুনা চরাঞ্চলে বানভাসি মানুষদের দুর্ভোগ কমছেই না। দীর্ঘ মেয়াদি হচ্ছে বন্যা। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষগুলো।
দেখা দিয়েছে মানুষের নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য ও নিরাপদ স্যানিটেশন। শিশুদের ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। বানভাসিদের ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় পানিবন্দি মানুষগুলো কেউ উঁচু জায়গা, কেউ বা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
এদিকে, টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানা যায়,শনিবার (১৩ জুলাই-২০২৪) সকাল নয়টায় ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফটিকজানি নদীর পানি নলচাপা ব্রিজ পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার, মির্জাপুর পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার, এবং মধুপুর পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এসব নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে
সরেজমিনে ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল কালিপুর, জয়পুর, পুংলীপাড়া, রেহাইগাবসারা, চন্ডিপুর, মেঘারপটল, রাজাপুর, অর্জুনা ইউনিয়নের শুশুয়া, বাসুদেবকোল, ভদ্রশিমুলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কয়েকদিন ধরে একটু একটু করে পানি কমছিল। কিন্তু ফের নতুন করে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলেও কমছে ধীরে ধীরে। ফলে এখনো চরের শতশত ঘরবাড়ি পানিতে ভাসছে ও তলিয়ে রয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চরের লোকজন তাদের গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। চরের পানিবন্দি ঘরবাড়িতে টিউবওয়েল, স্যানিটেশন, রান্নাঘর তলিয়ে রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে পানি সরবরাহ করে প্রয়োজনীয় কাজ করছেন বানভাসি মানুষগুলো। কিছু কিছু এলাকায় ত্রাণ পেলেও এখনো অসংখ্য পরিবার ত্রাণ সামগ্রী সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগও করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে চরাঞ্চলসহ ৪টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় দেড় হাজারের অধিক দরিদ্র মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পানি মজুদ রাখার পাত্র বিতরণ করা হয়েছ। এসব ত্রাণ সামগ্রী পর্যাপ্ত রয়েছে। ত্রাণ সহায়তা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদানসহ সকল ধরণের কার্যক্রম চলমান থাকবে।