গত ১৫ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনায় গত রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা জানানো হয়। তবে বুধবারেও কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আরম্ভ হয়নি ক্লাস-পরীক্ষা।
এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রুত সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষে শিক্ষকদের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে বলে তথ্য রয়েছে।
এছাড়াও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের নানা সমালোচনামূলক পোস্ট দিতে দেখা গেছে। সেখানেও দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে সম্প্রতি আন্দোলনে সরকার পতনের পরে পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা বাকি বিল্লাহ বিকুল পদত্যাগ করেন।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে দায়িত্বরত অনেকে ঠিকমত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকে নিদিষ্ট অফিস সময়ের আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন বলে জানা যায়।
সবমিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে ভেটু পরেছে। একরকম প্রশাসনশূন্য বলা চলে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক জ্যেষ্ঠ শিক্ষকই মনে করছেন দ্রুত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে যোগ্য ব্যক্তিদের উপাচার্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দিতে হবে অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়লকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা কঠিন হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির একাধিক বিভাগে সেশনজট রয়েছে। ভয়াবহ করোনা কালীন সময়ে সারাদেশে ন্যায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম পিছিয়ে যায়। সম্প্রতি আন্দোলনের ফলে শিক্ষা কার্যক্রম আবারও কিছুটা গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা চালু করা না হলে শিক্ষার্থীদের বড় ধরণের ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। এতে অনেক শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা কাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন বলেন, আমরা দ্রুত স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরতে চাই। আমার পরীক্ষা চলছিল সেটা আটকে গেছে। দ্রুত সময়ের মাঝে সব চালু না হলে বড় ধরণের ক্ষতি হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদ বলেন, ছাত্র-শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে আসতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় এভাবে চলতে পারে না। দ্রুত সময়ের মাধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা চালু করতে না পারলে আমাদের শিক্ষার্থীরা বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এমন অবস্থায় উপাচার্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এদিকে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর ব্যাপারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় সভাপতিদের সাথে আলোচনা করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত মঙ্গলবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মখলেচুর রহমান সুইটের নেতৃত্বে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, সায়েম আহমেদ সহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।