শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কক্সবাজার জেলায় ভারি বর্ষণ হচ্ছে। রাতে হঠাৎ কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের ডিককুল এলাকায় পাহাড়ধসে মা-মেয়েসহ একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়।
মৃতরা হলেন: ওই এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি মনি (২৬) এবং তার দুই শিশুকন্যা মিহা জান্নাত নাঈমা ও লতিফা ইসলাম।
প্রতিবেশীরা জানায়, রাতের পর থেকে টানা বৃষ্টি হওয়ায় মিজানের বাড়ির দিক থেকে পাহাড়ধসের একটি বিকট শব্দ শোনা যায়। পরে তারা সেখানে গিয়ে দেখেন মিজানের পরিবারের সদস্যরা মাটিচাপা পড়েছে।
তাৎক্ষণিক মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও তার স্ত্রী-সন্তানরা মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। পরে দমকল বাহিনী এলে মা ও দুই মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুল করিম সিকদার বলেন, ‘টানা বর্ষণের কারণে কক্সবাজার সদর উপজেলার অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকায় এসব এলাকায় সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু অনেকে নিরাপদে সরে না যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিজানের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকাল থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে ভোররাতে তার বাড়িতে পাহাড়ধসে এই দুর্ঘটনা ঘটে।’
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়।
তারা হলেন: ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের ছেলে আব্দুর রহিম, আব্দুল হাফেজ ও আবদুল ওয়াহেদ।
এদিকে পাহাড় ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী। পরে তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবসান কমিশনার অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজা নয়ন বলেন, ‘অব্যাহত ভারি বর্ষণে উখিয়ার ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে তিনটি বসত ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে মাটি চাপায় একই পরিবারের তিন সহোদরের মৃত্যু হয়েছে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা বিধ্বস্ত ঘর বাড়িতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে মাটি সরিয়ে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করে।’
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৭ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০১ মিলিমিটার। চলতি মৌসুমে এটি একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।