লেবাননে গত সপ্তাহে দুই দফায় ডিভাইস বিস্ফোরণ করেছে ইসরায়েল। এর জন্য তারা পরিকল্পনা করছিল দীর্ঘদিন ধরে।
মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ জানিয়েছে, 'সাপ্লাইচেইনে' হস্তক্ষেপ করে এমন হামলার পরিকল্পনা অন্তত ১৫ বছর ধরে করছে ইসরায়েল।
এমন কৌশলের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) অনীহা ছিল বলে জানায় এবিসি। কারণ তাদের মতে, এখানে নিরপরাধ মানুষের হতাহতের ঝুঁকি অনেক বেশি।
ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সরাসরি অর্থায়নে পেজার তৈরির একটি বৈধ কোম্পানি গড়ে তোলা হয়। যার অধীনে থাকে কিছু নামসর্বস্ব কাগুজে কোম্পানি।
হিজবুল্লাহকে পেজার সরবরাহ করে হাঙ্গেরিভিত্তিক সংস্থা 'বিএসি কনসাল্টিং'। নিউইয়র্ক টাইমসের দাবি, এই সংস্থাকেও নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ইসরায়েলি গোয়েন্দারাই। একে ইসরায়েলের কাগুজে কোম্পানিগুলোর একটি হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২২ সালের মে মাসে হাঙ্গেরিতে একটি সীমিত দায় কোম্পানি (এলএলসি) হিসেবে তালিকাভুক্ত হয় বিএসি। তবে ইন্টারনেট ডোমেন রেকর্ড অনুসারে, ২০২০ সালের অক্টোবরেই এর ওয়েবসাইট নিবন্ধিত হয়।
২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে ২০২৪ সালের মধ্যে অন্তত তিনবার ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা ও কর্মপন্থা পরিবর্তন করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, বিএসি আরও অনেক সংস্থাকেও পেজার সরবরাহ করেছে। তবে শুধু হিজবুল্লাহকে পাঠানো পেজারগুলোতেই 'পিইটিএন' বিস্ফোরক সম্বলিত ব্যাটারি লাগানো ছিল।
পেজারগুলোতে এক থেকে দুই আউন্স বিস্ফোরক এবং একটি রিমোট ট্রিগার সুইচ রাখা হয়েছিল।
২০২২ সালে প্রথম এই ডিভাইসগুলো লেবাননে পৌঁছাতে শুরু করে। ইসরায়েল নজরদারি করতে পারে, এই শঙ্কায় হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিলে পেজারের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়।
লেবাননে বিস্ফোরিত পেজারগুলোতে তাইওয়ানের সংস্থা গোল্ড অ্যাপোলোর লোগো ছিল। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পণ্যগুলোর নকশা ও উৎপাদনের দায়িত্ব একান্তই বিএসির ছিল। তবে তারা বিএসিকে নিজেদের ব্র্যান্ডিং ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল।