নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত না করে একযোগে ১৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা অভিযান পালিত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখা, ডেঙ্গু ও এডিস মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়াসহ স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে এর মূল লক্ষ্য ।
নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন এপরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কিত এক নির্দেশনা দেন ।
নির্দেশনায় ২৪ও ২৫ সেপ্টেম্বর এই দুইদিনের মধ্যে পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে পাশাপাশি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আগামী বৃহস্পতিবার (২৬সেপ্টম্বর) এর মধ্যে উপজেলার ১৮২ প্রাইমারি স্কুলের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার রিপোর্ট তৈরি করে জমা দিবে জেলা শিক্ষা অফিসে।
এই নির্দেশনার আলোকে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার রাখায় যেসব শিক্ষার্থী বেশি অবদান রাখবে, তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া উপজেলায় তাদের স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে অবস্থিত শ্রেষ্ঠ পরিচ্ছন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় বাছাই করে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। এসব বিষয় প্রতিপালনে ব্যর্থ প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে উপজেলার ১৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার বিশেষ এই অভিযান একযোগে পরিচালিত হচ্ছে। এঅভিযান ২৪ ও ২৫সেপ্টেম্বর চলবে। আগামী ২৬সেপ্টেম্বর এই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভিযানের রিপোর্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিতে বলে জানান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
সরেজমিনে কেন্দুয়া উপজেলা পৌরসভার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নের চাপুরী কতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিরাং ইউনিয়নের পূর্বরায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এপরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সচিত্র দেখতে পাওয়া যায়।
উপজেলার রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নে চাপুরী কতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভিযান পরিচালিত করছি। মূলত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।
বিদ্যালয় আঙ্গিনা যাতে কোনোভাবেই অস্বাস্থ্যকর না থাকে, কোথাও যাতে ময়লা-আবর্জনা জমে না থাকে এবং শ্রেণিকক্ষগুলোও যাতে অপরিষ্কার না থাকে সেজন্য এই অভিযান।
চাপুরী কতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের বিদ্যালয় আমরা আনন্দের সাথে পরিষ্কার করছি। সুন্দর পরিবেশে থাকব, ক্লাস করব এইটা আমাদের মূল লক্ষ্য।
সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মীর্জা মোহাম্মদ সোহাগ জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বয়স কম। তাদের জন্য শিক্ষার পরিবেশটা অত্যন্ত সুন্দর ও আকর্ষণীয় হওয়া জরুরি। একই সঙ্গে তাদের স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে তাদের জন্য একটি স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।
ডেঙ্গুসহ অন্যান্য বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশের বিকল্প নেই। উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একযোগে বিশেষ এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং পরবর্তীতে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম যথাযথভাবে অব্যাহত রাখলে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নানান স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এড়াতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।
এব্যাপারে কেন্দুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রধান শিক্ষকদের সাপ্তাহিক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সারা বছর অব্যাহত রাখতে হবে, শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি ক্লাস রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, আবশ্যিকভাবে খেলার মাঠ যথাসম্ভব পরিচ্ছন্ন ও খেলাখুলার উপযোগী রাখতে হবে,খেলার মাঠে ময়লা ফেলার জন্য বড় আকারের পাত্র রেখে তা নিয়মিত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করতে হবে, জায়গা থাকলে বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থাসহ মৌসুমী ফুলের বাগান করতে হবে বলে তিনি জানান।