ভারতের অন্যতম শীর্ষ শিল্পপতি ও টাটা গ্রুপের কর্ণধার রতন টাটা মারা গেছেন। বার্ধ্যক্যজনিত অসুস্থতা নিয়ে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
ভারতের শীর্ষ এ শিল্পপতির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ শীর্ষ রাজনীতিবীদ ও বিশিষ্টজনেরা।
পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা তার ভাই, বোন এবং পরিবার যারা তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন তাদের প্রতি ভালবাসা এবং সম্মানের। যদিও তিনি ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সাথে আর নেই, তবে তার নম্রতা, উদারতা এবং উদ্দেশ্যের উত্তরাধিকার ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেকারন বলেন, রতন টাটাকে আমাদের জাতির গঠনে তার অবদান অপরিমেয়। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন,আমরা গভীর বেদনার সঙ্গে রতন নেভাল টাটাকে বিদায় জানাই। তিনি একজন সত্যিকারের অনুস্বরণীয় ব্যক্তিত্ব যার অবদান কেবল টাটা গ্রুপকেই নয়, আমাদের জাতির গঠনকেও ভূমিকা রেখেছে।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি তাকে অমায়িক লোক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, শ্রী রতন টাটা একজন দূরদর্শী ব্যবসায়ী নেতা, অমায়িক ব্যক্তি এবং অসাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি ভারতের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটিকে স্থিতিশীল নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন।
ভারতের লোকসভার বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধীও তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রতন টাটা দূরদর্শী একজন মানুষ ছিলেন। তিনি ব্যবসা এবং জনহিতকর উভয় ক্ষেত্রেই একটি দীর্ঘস্থায়ী ছাপ রেখে গেছেন। তার পরিবার এবং টাটা পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তার মৃত্যতে গভীর শোক জানিয়ে তাকে টাইটান অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়গে তাকে অমূল্য সন্তান বলে উল্লেখ করেছেন।
রতন টাটা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হননি। তবে ২০১১ সালে একটি সাক্ষাৎকারে জীবনে প্রেম এসেছিল বলে স্বীকার করে নেন। চার-চারবার বিয়ের পিঁড়িতে বসার উপক্রম হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো সম্পর্ক পরিণতি পায়নি বলে জানান।
২০০০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পান রতন টাটা। ২০০৮ সালে পান ‘পদ্ম বিভূষণ সম্মান’। মহারাষ্ট্র, আসাম সরকারও তাকে সম্মান প্রদান করে। ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স, আইআইটি বম্বে, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, রাজা তৃতীয় চার্লসের থেকেও বিশেষভাবে সম্মানিত হন।