শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫ ৬ আষাঢ় ১৪৩২
শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫
গারো পাহাড়ে পিঁপড়ার ডিমে জীবিকা নির্বাহ
শেরপুর জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:১৭ PM
বাংলাদেশে অনেক পেশা থাকলেও ব্যতিক্রমী একটি পেশা হলো পিপড়ার ডিম সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করা।

শেরপুর জেলার গারো পাহাড়ের উপজেলার রাংটিয়া,নওকুচি,গান্ধিগাও,বাঁকাকুড়া,গুরুচরণ,দুধনই, মালকোচা,বালিঝুড়ি,মধুটিলা,বারোমারী এলাকার একশ্রেণির শতাধিক বেকার- কর্মহীন আদিবাসী বাঙালি এ পেশার সাথে জড়িত থেকে সংসার চালাচ্ছে। 

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত  একধরনের বাঁশের আগালে নেট দিয়ে ঠোঙ্গা বানিয়ে পাহাড়ের শাল-গজাড়ী বনে আম, জাম, লিচু গাছে লাল  পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে থাকে। পরে তা স্থানীয় হাট বাজারে নিয়ে ৮০০-থেকে ১০০০টাকা কেজি বিক্রি করা যায়। তবে সারা বছর পাওয়া যায়না এই ডিম। বর্ষার সময় পাহাড়ের বিভিন্ন মগডালে পাতা ও গাছের গোড়ায় গর্তে পিপড়ারা বাসা বাঁধে। এই সময়টা অনেক পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করা যায়। 

প্রতিদিন ৩০০গ্রাম থেকে ১কেজি পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করা যায়। পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করার জন্য গারো পাহাড়ে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া ও বাঁকাকুড়া গ্রামের হাট বসে। এই হাট থেকে ডিম ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিদেশেও বিক্রি করা হয়। পিঁপড়ার ডিম  মৎস শিকারীদের কাছে এই ডিমের বিরাট চাহিদা রয়েছে। তবে এই ডিম সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকেই সাপ ও বন্য প্রাণীর আক্রমণের শিকার হতে হয়।

ডিম সংগ্রহকারী নাকশি এলাকার রাজিব বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন পাহাড় ঘুরে ৩০০ গ্রাম থেকে ১কেজি পর্যন্ত ডিম পাওয়া যায়। পরে  তা স্থানীয় রাংটিয়া বাজারে মহাজনের কাছে  ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি  বিক্রি করি।বরশি দিয়ে  মাছ মারার জন্য ঢাকাসহ সারাদেশের এই ডিমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে ডিম সংগ্রহ করতে গিয়ে বিভিন্ন রকমের সাপ, বিচ্ছু, হাতিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আক্রমণের ভয় থাকে।

রহিম মিয়া বলেন, শীতের সময় পিঁপড়ার ডিম অনেকটা সোনার হরিণে পরিনত হয়। তখন আর লাল পিঁপড়া পাওয়া যায় না তাই তাদের ওই সময়টা অভাব অনটন লেগেই থাকে। কষ্টকর হয়ে পড়ে তাদের জীবন জীবিকা চালানো। তিনি বলেন, পাহাড়ে যারা এই ডিম সংগ্রহ করে থাকেন তাদের তালিকা বের করে সরকার যদি সহযোগিতা করতেন তাহলে তাদের এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হতো না।

পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েস এর সাধারণ সম্পাদক মারুফুর রহমান বলেন,গাছের মগ ডালের পিঁপড়া ও পিঁপড়ার ডিম পাখিদের খাদ্য। তাদের খাদ্য ঘাটতি হলে পাখিদের অস্তিত্ব সংকট দেখা দিতে পারে। তাই এ পেশার মানুষদের পিঁপড়ার ডিম চাষ পদ্ধতির মাধ্যম উপায় বের করতে হবে এবং সরকারকে এ পেশায় জড়িতদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে চাষাবাদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত