শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চ ইতিহাসের অন্যতম প্রশংসিত ও জনপ্রিয় নাটক ‘নিত্যপূরাণ’-এর ১২৭তম প্রদর্শনী চলাকালীন সরাসরি মঞ্চে উঠে পড়েন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কিংবদন্তি ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
তিনি বিনয়ের সঙ্গে শো বন্ধ করতে বললেন। জানান তার অপারগতার কথা। চেয়ে নেন ক্ষমা। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক চেষ্টা করেছি। এতক্ষণ যুদ্ধ করেছি। আমি লজ্জিত। ক্ষমাপ্রার্থী। এখন নাটকটি কনটিনিউ করলে উত্তেজিত জনতা এসে আগুন লাগিয়ে দেবে। তখন আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে।’
জাতীয় নাট্যশালায় দেশ নাটকের ‘নিত্যপূরাণ’ প্রদর্শনী শুরুর কিছু আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে একদল তরুণ অবস্থান নেয় মূল ফটকে। তারা নাট্যশালায় আগতদের প্রবেশে বাধা দেয়া শুরু করেন। জানাতে থাকেন, দেশ নাটক’র অধিকর্তা এহসান আজিজ বাবু ফেসবুকে দেশবিরোধী নানা প্রচারণা ও বর্তমান সরকার প্রধানসহ অন্যান্য উপদেষ্টাদের ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ ও রাজাকার আখ্যা দিয়ে আসছেন।
তারা আলটিমেটাম দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এহসান আজিজ বাবুকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিচারের আওতায় আনাতে হবে। পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমিকে এ ধরণের দলকে হল বরাদ্দ দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
তাদের অব্যাহত প্রতিবাদ আর দর্শক প্রবেশে বাধা দান ও বিচারের দাবির প্রেক্ষিতে একপর্যায়ে দেশ নাটকের দল প্রধান কামাল আহমেদ প্রতিবাদকারীদের সাথে দেখা করেন। এহসান আজিজ বাবুকে ৩ দিনের মধ্যে বহিষ্কারের আশ্বাস দেন।
এরপর প্রতিবাদকারীরা সাময়িকভাবে তা মেনে নিয়ে আজকের প্রদর্শনী বাতিলের দাবি জানায়। এসময় একটি প্রতিবাদী ব্যানার জাতীয় নাট্যশালার ফটকে ঝুলিয়ে দেন তারা।
এরপর প্রতিবাদকারীদের শান্ত করতে সেখানে যুক্ত হন শিল্পকলার মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। তিনি বহুভাবে চেষ্টা করেন বোঝানোর। কিন্তু চলমান প্রদর্শনী বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে। অবশেষে সহিংসতা এড়াতে মহাপরিচালক নাটকটির প্রদর্শনী বন্ধ করতে বাধ্য হন।
স্টেজে উঠে মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, ‘আমি অনেক চেষ্টা করেছি। এতক্ষণ যুদ্ধ করেছি। আমি লজ্জিত। ক্ষমাপ্রার্থী। এখন নাটকটি কনটিনিউ করলে উত্তেজিত জনতা এসে আগুন লাগিয়ে দেবে। তখন আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে।’