সোনারগাঁয়ে মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বহন করা একটি গাড়ি ‘ছিনতাইকারীদের কবলে’ পড়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধারালো অস্ত্রের মুখে গাড়িতে থাকা ছাত্রনেতাদের মোবাইল ও মানিব্যাগও লুট করা হয়েছে।
বান্দরবানের লামায় যাওয়ার পথে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার মেনিখালী ব্রিজ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহেদ মোর্শেদ।
ওসি বলেন, শীতের রাতে কুয়াশা থাকায় ছাত্রনেতাদের বহন করা মাইক্রোবাসটি ধীরগতিতে চলছিল। এ সময় একদল ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র হাতে গাড়িটি থামিয়ে গাড়ির কাচ ভেঙে ছাত্রনেতাদের মোবাইল-মানিব্যাগ লুট করে। গাড়ির কাচ ভাঙায় দু’জন ছাত্রনেতা আঘাত পেয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রনেতাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে এবং পরে অন্য গাড়ি এলে ছাত্রনেতাদের কয়েকজন ঢাকায় এবং বাকিরা লামার উদ্দেশে রওনা হন বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার ধরণ ও বিবরণে ঘটনাটি ছিনতাইকারীদের কোনো দল ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছি। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে সোনারগাঁ থানা পুলিশ কাজ করছে।
তবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ঘটনার পরপর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এই ঘটনাকে ‘হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
‘হামলা’র শিকার গাড়িটিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, সদস্য, রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চজ্ঞা, মাহমুদা সুলতানা রিমি, রাকিব মোহাম্মদ, মুঈনুল ইসলাম, ইব্রাহিম নিরব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন মিতু ও ছাত্রনেতা মিশু আলী সুহাস ছিলেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে মাহমুদা সুলতানা রিমি ও রাকিব মোহাম্মদ আহত হয়েছেন।
সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা মোবাইল ফোনে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সোমবার বান্দরবানের লামা উপজেলায় একটি স্মরণসভা ও মতবিনিময়ে অংশ নেওয়ার কথা। সে উদ্দেশ্যেই রোববার দিবাগত রাতে একটি গাড়িতে করে আট সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকা ছাড়েন।
গাড়িতে থাকা রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চজ্ঞা বলেন, ‘গাড়িতে আমরা আটজন ছিলাম। এরই মধ্যে চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে কাপড়ে মুখঢাকা একদল লোক এসে গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে চালকের গলায় চাপাতি ধরে। হামলাকারীরা তখন গাড়িটির চারপাশ ঘিরে ফেলে। তারা চাপাতিসহ হাতে থাকা অস্ত্রের আঘাতে পুরো গাড়িটির কাঁচ ভেঙে আমাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা, ব্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি কেড়ে নেয়।’