অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একজন বীরশ্রেষ্ঠ। যিনি নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও গুলির সামনে অবিচলভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন।’
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু সাঈদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর ভিডিও দেখিনি, শুনেছি। শুনছিলাম বিভিন্ন জায়গায় গুলি হচ্ছে। আমি প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ দাবি করেছিলাম। এ সময় অনেকে আমাকে বলেছিল বাসায় না থাকতে। আমি রাত্রে এক সহকর্মীর বাসায় ছিলাম। তখন আবু সাঈদ মৃত্যুকে বরণ করার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। আমি ১৭ জুলাই প্রথম ভিডিও টা দেখি। আমি মানুষ হিসেবে খুব সাহসী না। কিন্তু তার ভিডিও দেখে আমার মনে হয়েছিল, আমাদের ভয় পাওয়ার কোনও অধিকার নেই। নিশ্চিত মৃত্যু জেনে একটা ছেলে জীবন দিতে পারে, আমরা তাদের অভিভাবক, আমাদের তো ভয় পাবার কোনও অধিকার নেই। আমি আশ্চর্য হয়ে যাই তার এমন আত্মত্যাগে।’
তিনি বলেন, ‘আমার মতো মধ্য বয়সী ভীতু মানুষকে জীবনের পরোয়া না করে দিনে রাতে আন্দোলনে থাকতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আবু সাঈদের মনে এত বড় শক্তি ছিল। আমি তার বিভিন্ন ফুটেজ দেখেছি, তার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখি। মৃত্যুর তিন দিন আগে ১৩ জুলাই নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল, শহীদ শামসুজ্জোহা স্যারের কথা উল্লেখ করে, এভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে তার মতো মরে যাওয়া অনেক সম্মানের। তিনি ওই দিন আরও অন্য একটি স্ট্যাটাসে বলেছেন অত্যাচারীদের সঙ্গে ১০০ বছর বাঁচার চেয়ে এর থেকে মরে যাওয়া অনেক সম্মানের ও আনন্দের।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদের হত্যার বিচার শুরু হয়েছে। তাকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে সেই পুলিশ কনস্টেবল সুজন চন্দ্র ও এএসআই আমির আলী ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। তাদের বিচারের জন্য ফরমাল চার্জ গঠন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাদের সমালোচনা করেন, বিচার কেন দেরি হচ্ছে। এ জন্য তো জুলাই আন্দোলন হয়েছে। আমরা চাই বেশি বেশি আমাদের সমালোচনা করেন। আমাদের জবাবদিহিতার মধ্যে রাখেন।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচার শুরু করলাম, তখন কোর্ট ভবন ছিল না। প্রকৌশলীরা বললেন, তিন মাস লাগবে। আমরা দ্রুততার সঙ্গে কাজ করিয়েছি। বিচারক ছিল, না বিচারক নিয়োগ দিয়েছি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিচার গ্রহণযোগ্য করতে যা যা করার করছি।’