এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গোপালগঞ্জে আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আক্রমণ চালানো হয়েছে। ফ্যাসিস্টরা গোপালগঞ্জকে তাদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে। আমরা গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষকে মুজিববাদ থেকে মুক্ত করব।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষের পাশে আমরা আছি। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, গোপালগঞ্জের একজন সাধারণ মানুষকেও যেন হেনস্তা করা না হয়। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে ফরিদপুরের পদযাত্রায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। স্থানীয় জনতা ব্যাংকের মোড়ে এনসিপির উদ্যোগে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ উপলক্ষে এ পদযাত্রার আয়োজন করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বক্তব্যের শুরুতে সমবেতদের ‘প্রিয় ফরিদপুরবাসী’ সম্বোধন করে বক্তব্য শুরু করেন। এরপর তিনি বলেন, প্রথমে আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। গতকাল আপনারা গোপালগঞ্জ যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। আমরা জানি সারা বাংলাদেশ প্রস্তুত ছিল গোপালগঞ্জ যাওয়ার জন্য। আমরা অবশ্যই যাবো। খুব শিগগিরই আমরা গোপালগঞ্জে যাবো।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি অপরাধীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না, আবার গ্রেপ্তার হয়ে কোর্ট থেকে ছাড়া পাচ্ছে, বিচার প্রক্রিয়া আগাচ্ছে না। প্রশাসনের বিভিন্নস্তরে যারা স্বৈরাচারের দোসর রয়েছে এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা রয়েছে তাদের বলে দিতে চাই, বিচারের দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি বিচার আদায় না করে আমরা রাজপথ থেকে উঠে যাবো না।
এনসিপির আহবায়ক বলেন, আমরা আসছি সেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান থেকে। আজকে পর্যন্ত বলে আসছি, আমাদের পথ মধ্যমপন্থা, আমাদের কর্মসূচি হলো শান্তিপূর্ণ ও অহিংস কর্মসূচি। কিন্তু যদি সন্ত্রাসী ফ্যাসিস্টরা আমাদের দিকে আসে, আমরা গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কিন্তু পিছপা হই না। লাঠি হাতে তুলে নিতে পিছপা হই না। গণঅভ্যুত্থানে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে প্রস্তুত ছিলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গতকালকে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ ও রিফাইন্ড মুজিববাদীদের একটা ভার্সন এ দেশের জনগণ দেখেছে। মুজিবাদী সন্ত্রাসীদের ৫ আগস্ট আমরা পরাস্ত করেছি। আমরা এখনও সময় দিচ্ছি আইনিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হোক। আর না হলে আমরা অবিলম্বে এই গোপালগঞ্জ জেলায় মার্চ করবো এবং এবার কিন্তু আমরা ফিরে আসার জন্য মার্চ করবো না। গোপালগঞ্জের মাটি ও জনগণকে সম্পূর্ণভাবে চিরতরে মুক্ত করে তারপরে পিরে আসবো।
তিনি বলেন, যারা ভেবেছিলেন এই জুলাই পদযাত্রায় আপক্রমণ করে, বাধা দিয়ে, সশস্ত্র হামলা করে থামিয়ে দেবেন তারা ভুলে গেছেন, কাদের সামনে দাঁড়িয়েছে। তারা মৃত্যুর মুখ থেকে বার বার ফিরে এসেছে। তাদের নেতৃত্বে এ জুলাই পদযাত্রা থামবে না। ৬৪ জেলায় এ পদযাত্রা না করে আমরা ঘরে ফিরবো না। এটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমাদের ওয়াদা এবং ৩ আগস্টের মধ্যে ৬৪ জেলায় পদযাত্রা শেষ করে শহীদ মিনারে ইাশতেহার ও জুলাই সনদ ঘোষণাপত্রের দাবিতে আমরা জড়ো হবে। পদযাত্রা চালাচ্ছি, পদযাত্রা চলবে, যা কিছু হয়ে যাক এ পদযাত্রা থামবে না।
সভায় উপস্থাপনা করেন মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এদিন শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপক জোরদার করা হয়। জনসভাস্থল ছাড়াও আশপাশের মোড়ে পুলিশ মোতায়েনর করা হয়।