সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের পাশে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চালবন্দ মোড়। তিন রাস্তার মোড়ে একজন কৃষক হাতে কাস্তে ও কাঁধে লাঙল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘কৃষাণ চত্বর’।
গ্রামবাংলার কৃষি ও কৃষকের ঐতিহ্য তুলে ধরতেই সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে নির্মাণ করা হয়েছিল ভাস্কর্যটি। চলতি পথে মানুষ সেখানে বিশ্রাম নিতেন, সেই ভাস্কর্য দেখতেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে এই ভাস্কর্যও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের সামনে ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই ভাস্কর্য ভাঙার একটি ভিডিও দেখা গেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন লোক হাতুড়ি দিয়ে ভাস্কর্যটি ভাঙছেন। এ সময় পেছন থেকে স্লোগান দিতে বলা হয়।
ভাস্কর্য ভাঙার আগের ছবি
এরপর ‘শেখ হাসিনার আস্তানা, বাংলাদেশে হবে না’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, বাংলাদেশে হবে না’, ‘শাহজালালের তলোয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দেন সেখানে থাকা লোকজন।
স্থানীয় একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই ভাস্কর্য কী দোষ করল বা এটার সঙ্গে রাজনীতির কী সম্পর্ক, বুঝতে পারছি না। বিষয়টি আসলে খুবই দুঃখজনক।’
ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার পরের চিত্র
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর, যাদুকাটা নদ, শিমুলবাগান, শহীদ সিরাজ লেকসহ হাওর এলাকার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে যেতে ‘কৃষাণ চত্বর’-এর ভাস্কর্যটি চোখে পড়ত। এর সামনে কয়েক কিলোমিটার এগোলেই পলাশ বাজারে রয়েছে ‘হাওর বৃত্ত’। এরপর বিশ্বম্ভরপর কারেন্টের বাজার মোড়ে রয়েছে হাওরের বিশাল বোয়াল মাছের আদলে একটি ভাস্কর্য, এই স্থানের নাম দেওয়া হয় ‘বোয়াল চত্বর’। সব কটিই উপজেলা প্রশাসন নির্মাণ করেছে।