বৃহস্পতিবার ৩ জুলাই ২০২৫ ১৯ আষাঢ় ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ৩ জুলাই ২০২৫
শ্রীপুরের বরমীর সূর্যমুখী ফুলের বাগান যেন দর্শনীয় স্থান
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৪:৫৬ PM আপডেট: ২৬.০২.২০২৫ ৫:১৫ PM
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের কায়েতপড়া (ফাতেমা নগর) গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা কবির হোসেন শখ থেকে সূর্যমুখী ফুলের বাগান করে এখন দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এটি এখন দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শণার্থী, ফুলপ্রেমী মানুষ দূর-দুরান্ত থেকে বাগান দর্শন করতে আসছেন। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ায় দর্শক সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বাগানের আশপাশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন খাদ্য পণ্যের অস্থায়ী দোকান। ফটোসেশনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে কারুকাজের বাহারি গেইট, বসার স্থান। এ বাগানের চাষী কবির হোসেন অবশ্য বাগানের কোনো প্রবেশমুল্য রাখেন না। দর্শণার্থীদের জন্য বাগানটি উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। যে যার ইচ্ছেমতো বাগানের ভেতর যেখানে সেখানে ফটোসেশন করছেন।

অর্থনৈতিক লাভের আশায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে সুর্যমুখী ফুলের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেন চাষী কবির হোসেন। কিন্তু ফুল ফোটার শুরুতেই চলতি মাসের প্রথম দিক থেকে দর্শণার্থীদের আনাগোণা শুরু হয়। আর ধীরে ধীরে সূর্যমুখী ফুলের বাগান হয়ে উঠে দর্শণীয় স্থান।

শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি শিক্ষার্থী রয়েল রায়, সুমাইয়া বলেন, বাগানটা খুব সুন্দর। ফেইসবুকের মাধ্যমে জেনে এসেছি। বেশ ভাল লাগছে। আমি এই বাগানের সংবাদ শোনে দেখার লোভ জেগেছে। তাই সহপাঠীদের নিয়ে চলে এসেছি। আমার মতো  আরও অনেকেই আসছে। বেশ সুন্দর নয়নাভিরাম।
সূর্যমুখী ফুল।

সূর্যমুখী ফুল।

" align=





একই কলেজের অপর শিক্ষার্থী মুহিবউল্লাহ বলেন, আমরা যে সয়াবিন তেল খাই তার চেয়ে বেশি স্বাস্থ্য সম্মত এই সুর্যমুখীর তেল। ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশপাশি সুর্যমুখীর চাষ বিনোদনেরও কেন্দ্রস্থল হবে। আমার প্রত্যাশা এই চাষ দেখে অন্যান্য কৃষকেরাও সুর্যমুখী ফুলের চাষে উদ্ধুদ্ধ হলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সফল হবে।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী থেকে এসছেন মুফতিয়া জাহান ও সায়মন। তিনি বলেন, এটা বিনোদনের অন্যরকম একটা উৎস। গ্রামের মাঝখানে এরকম বাগান বলার অপেক্ষা রাখে না। অনলাইনে দেখে এসে দেখে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। আমরা দুই বান্ধবী এসেছি। এখানকার বাগান সংশ্লিষ্টরা অনেক ভালো এবং পরিবেশটাও বেশ পরিষ্কার।

কৃষি উদ্যোক্তা কবির হোসেন বলেন, শখের বশে চার বিঘা জমিতে সুর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। আরেকটি দিক হচ্ছে সুর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে যে তেল হয় তা ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশ লাভজনক। আমার চাষ করার পেছনে সেটিও একটা কারণ। আর এই চাষে আমার বিশেষ কােনো কিছু ব্যায় করতে হয়নি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাকে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক প্রভৃতি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। বাগান পরিদর্শনে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন বাগানে ভীড় করছেন। তাদের মোকাবিলা করতেও বাগান কর্তৃপক্ষের বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রদর্শণীমূলক এ চাষে সফলতা আসলে আমি আগামী বছর আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করব।

" align=





শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা, বরমী ইউনিয়নের কায়েতপাড়া গ্রামে বারি সূর্যমুখী ফুলের প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। এখানে বীজ, সারের সরবরাহ করা হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, শ্রীপুর এর পক্ষ থেকে। এছাড়াও এখানে পার্টনার ফিল্ড স্কুল গঠন করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৫ জন কিষাণ-কিষাণী রয়েছেন। যাদেরকে সূর্যমুখী ফুল ছাড়াও বিভিন্ন তৈল জাতীয় ফসল উৎপাদন নিয়ে কলা-কৌশল, পোকা-মাকড়, রোগ বালাই দমন ব্যবস্থাপনা নিয়ে তাদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সূর্যমুখী আবাদের মাধ্যমে আমাদের ভোজ্য তেলে যে চাহিদা রয়েছে এতে আমাদনি নির্ভরতা কমবে এবং আমরা পুষ্টি সমৃদ্ধ তেল পাব। আমরা আশা করছি এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে অন্যান্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ হবে এবং আগামীতে আমাদের সূর্যমুখী আবাদ বৃদ্ধি পাবে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত