স্বামীর জামিনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে ডেকে এনে তিন দিন আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার রাতে ভুক্তভোগী ওই নারী মাধবদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে ওই গৃহবধূর অভিযোগ পেয়ে ইকবাল হোসেন নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এজাহারভুক্ত দুই আসামি হলেন নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন (৪৩) ও একই ইউনিয়নের পাপ্পু মিয়া (২৯)।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই নারীর স্বামী একটি মামলায় জেলে ছিলেন। তখন ইকবাল হোসেন আইনজীবী সেজে তাকে মুক্ত করার নামে ওই নারীকে বিভিন্ন লোভ দেখান। পরে চারজন মিলে ওই নারীকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে একটি ভবনে নিয়ে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মাধবদী থানা-পুলিশ তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী কারাগারে পাঠানো হয়।
এরপর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টার দিকে গৃহবধূর মুঠোফোনে কল করে ইকবাল হোসেন বলেন, “পাপ্পু নামের এক উকিল আছে, তোর স্বামীর জামিন করিয়ে দিতে পারবে। পাঁচদোনা আয়, কথা বলব।”
তার কথামতো সকাল ৮টার দিকে পাঁচদোনা মোড়ে গেলে ইকবাল গৃহবধূকে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে আরও চারজন ছিলেন। ইকবাল তাকে উকিল পাপ্পুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে গৃহবধূর কাছ থেকে মুঠোফোনটি কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিন দিন আটকে রেখে ওই পাঁচজন একাধিকবার ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা ৩টার দিকে ইকবাল গৃহবধূকে বাড়ির সামনে রেখে আসেন।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর অভিযোগ, ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন ইকবাল। এজন্য ভয়-আতঙ্কে তিনি ঘটনা কাউকে জানাননি। তার স্বামী জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরে তার শরীর খারাপের কারণ জানতে চান। ৭ মার্চ ঘটনার বিস্তারিত স্বামীকে জানান তিনি। এরপরই স্বামী, স্বজনসহ শনিবার দুপুরে মাধবদী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “ওই গৃহবধূকে তিন দিন আটকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে একজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”