লালমনিরহাট সদর উপজেলায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো ‘পার্টনার কংগ্রেস–২০২৫’। মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ প্রকল্পের আওতায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের লালমনিরহাট উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, “কৃষকদের নিরলস পরিশ্রমেই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে। তবে জমিতে বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।”
তিনি জানান, দেশের ৬৪ জেলার ৪৯৫টি উপজেলায় এই পার্টনার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর আওতায় ‘পার্টনার ফিল্ড স্কুল (পিএফএস)’ মডেলের মাধ্যমে কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকদের জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছর এ ধরনের কনগ্রেস আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোনীত দাস, রংপুর অঞ্চলের সিনিয়র মনিটরিং অফিসার আশোক কুমার রায় এবং সদর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা এ.কে.এম ফরিদুল হক। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমেদ।
সভাপতির বক্তব্যে খন্দকার সোহায়েল আহমেদ বলেন, “পিএফএস প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকদের প্যাকেজ প্রযুক্তির জ্ঞান অন্য কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়াই এ কংগ্রেসের মূল উদ্দেশ্য।” তিনি আরও জানান, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ, পুষ্টি সচেতনতা, বাজার ব্যবস্থাপনা এবং ফার্মার সার্ভিস সেন্টার গঠনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বক্তারা বলেন, আধুনিক কৃষি শুধু উৎপাদন নয়, এটি কৃষকের আয় বৃদ্ধি, জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণেও সহায়ক।
প্রায় ২০০ জন কৃষক-কৃষাণী, শিক্ষক, সাংবাদিক ও স্থানীয় ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই কংগ্রেসে পার্টনার প্রকল্পের প্রযুক্তি, কলাকৌশল ও টেকসই রূপান্তর পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, লালমনিরহাট সদর। বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (IFAD)-এর সহায়তায় পরিচালিত এই প্রকল্পটি দেশের কৃষি ও পুষ্টি খাতে টেকসই পরিবর্তনে ইতিবাচক অবদান রাখছে বলে মত দেন অংশগ্রহণকারীরা।