এখন চলছে মৌসুমি ফলের সময়। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে আম, কাঁঠাল, লিচু, লটকনসহ বিভিন্ন জাতের ফল। পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় ফল 'চাম কাঁঠাল'। অনেকের কাছে অপরিচিত হলেও উৎসুক মানুষ কিনে নিচ্ছেন এ ফল।
মৌলভীবাজার জেলার সব উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল ও বনাঞ্চলে এ ফলের গাছ দেখতে পাওয়া যায়। কোন কোন বাড়িতেও মাঝে মধ্যে এ ফল গাছ দেখা যায়। মানুষ খাদ্য হিসেবে এ ফল গ্রহন করলেও বন্যপ্রাণীর খাদ্য হিসেবে এ ফল প্রসিদ্ধ।
চাম কাঁঠাল দেখতে অনেকটা কাঁঠালের মতো তবে আকারে ছোট। কাঁঠালের মতো কোষগুলো স্বাদে হালকা টক-মিস্টি। কাঁঠালের মতো এ ফলেরও রয়েছে বীজ। এ বীজ ভাজলে অনেকটা বাদামের মতো স্বাদ পাওয়া যায়। সাধারনত জুন-জুলাই মাসে এ ফল পাকে এবং বাজারে দেখতে পাওয়া যায়।
গতকাল সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল শহরের চৌমোহনার ফুটপাতে চাম কাঁঠাল বিক্রি করতে বসেছিলেন আমজাদ আলী নামের এক বিক্রেতা। তিনি জানান, এসব চাম কাঁঠাল তিনি কমলগঞ্জের শমসেরনগর এলাকা থেকে সংগ্রহ করেছেন।প্রতিটি চাম কাঁঠাল তিনি ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন। অনেকেই আগ্রহ নিয়ে এই কাঁঠাল কিনতে দেখা যায়।
জানা যায়, চাম কাঁঠাল হচ্ছে কাঁঠালের নিকটাত্মীয় একটি বুনো ফল। যা সাধারণত ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দেখা যায়। আমাদের দেশে সিলেট, মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল, রাঙামাটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম, মধুপুরে পাওয়া যায়। এক সময় বনবাদারে এই ফল ও ফল গাছ প্রচুর দেখা গেলেও এখন এই গাছ বিলুপ্তপ্রায়।
এই ফলের অন্য নামগুলো হচ্ছে-- চাম্বুল, বুনো কাঁঠাল, চামল, চামফল, কাঁঠালি চাম প্রভৃতি। এর বৈজ্ঞানিক নাম 'আর্টোকার্পাস চামা'। 'মোরাসি' পরিবারের একটি কাঁঠাল জাতীয় বন্য প্রজাতির ফল।
এই গাছের কাঠ দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই হওয়ায় আসবাবপত্র, দরজা-জানালাসহ রেল লাইনের স্লিপার তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়।
চাম কাঁঠালের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। পরিপক্ক ফল সাধারণত হালকা টক-মিষ্টি হওয়ায় এতে প্রাকৃতিক শর্করা থাকে যা তাৎক্ষণিক শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। আঁশসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হজমে সহায়ক এবং অন্ত্রে মল চলাচল সহজ করে। এতে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রন আছে, যা শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে সাহায্য করে।এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে।