কক্সবাজারের বিভিন্ন মাছ বাজারে দেখা দিয়েছে এক নতুন ও লাভজনক বাণিজ্য সামুদ্রিক বাইম বা কামিলা মাছের বায়ু থলি বিক্রি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মূল মাছের পাশাপাশি মাছের এই বিশেষ অঙ্গ আলাদা করে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি কেজি বাইম মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কিন্তু মাছের বায়ু থলি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২২ হাজার টাকায়। বিক্রেতারা জানান, থলিগুলো শুকিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ওষুধ ও প্রসাধনী শিল্পে ব্যবহার হয়। এছাড়া, এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, “মাছ কাটার পর পেট থেকে বায়ুথলিটি আলাদা করে আলাদা দামে বিক্রি করি। এক মাছ থেকেই এখন দ্বিগুণ লাভ হচ্ছে।”
মৎস্য কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন বাণিজ্য কেবল ব্যবসায়িক লাভের জন্যই নয়, স্থানীয় অর্থনীতিতে সামুদ্রিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে।
মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, “বাইম মাছের বায়ু থলি সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ করা গেলে স্থানীয় মৎস্য শিল্পের জন্য এটি বড় সুযোগ। তবে থলির সঠিক মান ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ জরুরি।”
সমুদ্র গবেষনা ইনস্টিটিউটের গবেষক তরিকুল ইসলাম বলেন, "এই থলিগুলোতে প্রাকৃতিক উপাদান থাকে যা ওষুধ ও প্রসাধনী শিল্পে মূল্যবান। স্থানীয়দেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির মান উন্নত করলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও সহায়তা করবে।”
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, মাছের এই বিশেষ অঙ্গ বিদেশে রপ্তানি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও অবদান রাখছে। বাজারের ক্রেতারা জানাচ্ছেন, এই থলি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পেশাদার ওষুধ প্রস্তুতকারীরা থলিকে ব্যবহার করে শরীরচর্চা, ওষুধ, এবং প্রসাধনী পণ্যে ব্যবহার করছেন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এক কেজি শুকনো থলির দাম কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, স্থানীয় ব্যবসায়িকরা এই নতুন পণ্যের মাধ্যমে অর্থনৈতিক লাভের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও নাম রাখতে সক্ষম হবেন।
কক্সবাজারে সামুদ্রিক মাছের বাজার ও তার নতুন বাণিজ্য এই অঞ্চলের ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ইতিবাচক সাড়া এবং ক্রেতাদের আগ্রহ দেখিয়ে যাচ্ছে, এই নতুন পণ্য অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে।