পল্লবীতে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়া হত্যা মামলায় আটক মোক্তার হোসেন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে মারা গেছে। ঘটনা তদন্তে পুলিশের তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, মোক্তার ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পল্লবী থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি। এরপর আজ শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, গত ১৭ নভেম্বর পল্লবীতে কয়েকজন অস্ত্রধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়া নিহত হন। এ ঘটনায় পাঁচজন এজাহারনামীয় এবং সাত-আট জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের লক্ষ্যে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নজরুল, মাসুম ও জামান নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন এবং ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি মোক্তার হোসেনের হেফাজতে আছে বলে জানান।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মোক্তারকে আটক করতে ডিবির একটি টিম গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পল্লবী এলাকায় একটি গ্যারেজে অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোক্তার দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কৌশলে তাকে আটক করা হয়। এসময় উত্তেজিত জনতা মোক্তারকে কিল-ঘুষি মারে। এরপর মোক্তারের দেখানো মতে পল্লবী এলাকার একটি রিকশা গ্যারেজ থেকে আট রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করে ডিবি।
তালেবুর রহমান আরও বলেন, মোক্তারকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হলে রাত দেড়টার দিকে অসুস্থ বোধ করে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কিছু ওষুধপত্র দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেন। পরে মোক্তারকে রাতেই আবারও ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
এরপর আজ (শুক্রবার) সকাল ১০টার দিকে মোক্তারকে খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করা হলে তিনি কোন সাড়া দেননি। পরে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।