আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনী-২ আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচারণা শুরু করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান ও ফেনী সদর উপজেলার কৃতি সন্তান মজিবুর রহমান মঞ্জু। ফেনী শহরের একটি হলে সংবাদ সম্মেলন ও মতবিনিময় সভার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়। এরমধ্যে ফেনী সদর উপজেলা জুড়ে মঞ্জুর ব্যানার-পোস্টার লাগানো শুরু হয়েছে।
ফেনী জেলা এবি পার্টির আহবায়ক মাস্টার আহসানুল্লাহর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহ আলম বাদল, দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, উপস্থিত ছিলেন পেশাজীবী পরিষদের সদস্য এডভোকেট সাইফুল্ল্যাহ নোমান, জেলার যুগ্ম আহবায়ক মোতাহের হোসেন বাহার, সদস্য সচিব অধ্যাপক ফজলুল হক, যুগ্ম সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম কামরুল, মামুন আনসারী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত সাজু, কোষাধ্যক্ষ শাহীন সুলতানী, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মিয়াজী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা মনি, সমাজ কল্যান সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সহ দপ্তর সম্পাদ নাজরানা হাফিজ, নারী নেত্রী শাহানা শানু, হুরে জান্নাত, ফেনী পৌর আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ সেলিম,সদস্য সচিব রেজওয়ানুল খাইর, নাফিজ ইমতিয়াজ শিমুল, ফেনী সদর উপজেলার আহবায়ক শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব সাইদ খান,যুগ্ম সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম সবুজ, সদস্য সাইদুল হক মিলন, যুব পার্টি আহবায়ক শফিউল্যাহ পারভেজ,সদস্য ইব্রাহিম সোহাগ,প্রমুখ।
মজিবুর রহমান মঞ্জু সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এমপি নির্বাচিত হলে নিজের ঘাটলা বা বাড়িতে শালিস দরবার করবেন না, প্রশাসনকে কাজের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ এবং বাজার বা স্কুল কমিটির নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেন না। পাশাপাশি ডিসিসহ সকল সরকারি দপ্তরে সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তা বাছাইয়ের চেষ্টা, সরকারি দপ্তরে কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, সরকারি বরাদ্দের তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
ফেনীতে মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেনা ব্রিগেড স্থাপনে উপযুক্ত জায়গা দেখিয়ে দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্য যা করা দরকার তা করবেন। মঞ্জু জানান, জাতীয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান এবং পরিচিতি কাজে লাগিয়ে ফেনীর বন্যা নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করানো, বেশ কিছু রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার, অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন এবং শিক্ষা ও ক্রীড়া সামগ্রী বরাদ্দসহ বেশ কিছু কাজ তিনি করিয়েছেন।
তিনি বলেন, পুরোনো রাজনীতি আর পুরোনো তর্ক বাদ দিয়ে ফেনীসহ সারাদেশের সমস্যা সমাধানে জোর দিতে হবে। খারাপ লোককে নির্বাচিত করলে পরিণতি আরো খারাপ হবে।
তিনি বলেন, পরিবর্তন এখনি শুরু করতে হবে, এবং ইতিবাচক রাজনীতি শুরু করার প্রত্যয় জানিয়ে তাকে সমর্থন দিতে ফেনীবাসীর প্রতি আহবান জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের এক উপদেষ্টা সম্প্রতি বলেছেন ডিসি-এসপি নিয়োগে বড় দুই দল কাড়াকাড়ি করছে, এমন হলে তো সাধারণ ভোটারের আর কোন ভুমিকা থাকে না। জামায়াতের এক নেতার প্রশাসন দখলের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান তিনি। মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অভ্যুত্থানের পর সবাই মুক্তভাবে রাজনীতি করছে, এটা একটা বড় অর্জন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী পদে দুইবারের বেশি কেউ থাকতে পারবে না এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরোধী দলের মতামত নেয়া বাধ্যতামূলক এসব সংস্কার বাস্তবায়িত হলে আগামী দশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক পরিবর্তিত হবে। তিনি বলেন এখন যে কেউ সরকার প্রধানের কড়া সমালোচনা করতে পারছেন, এটি কিছুদিন আগেও সম্ভব ছিল না।
তিনি বলেন, 'সুযোগ থাকার পরও বিএনপির সাথে জোটে যাইনি কারণ বিএনপির অনেক নেতা এত বছর সংগ্রাম করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। তাদের দলের নমিনেশন পাওয়ার অধিকার আছে।'
জুলাই অভ্যুত্থানে দল হিসেবে যারা সামনে থেকে ভুমিকা রেখেছে তাদের নিয়ে নতুন জোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ২৫ নভেম্বর নতুন জোটের ঘোষণা আসতে পারে। এছাড়া জাতীয় রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। দলীয় নেতাকর্মীদের বাইরে স্বাধীন ভোটারদের সমর্থন কামনা করেন তিনি। এমপি নির্বাচিত নাহলেও ফেনীবাসীর জন্য আজীবন কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি। বিদেশিদের হাতে বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেয়াতে দোষের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংসয় নেই কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ এখনো রয়েছে। এছাড়া ফেনী বিএনপির সব পক্ষ চাইলে জোটের প্রার্থী হতে আপত্তি নেই বলে জানান তিনি, তবে কাউকে কষ্ট দিয়ে এমপি হওয়ার ইচ্ছা নেই। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।