দেশের সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আলাদা দাবিতে টানা কর্মবিরতি পালন করায় সারা দেশের বার্ষিক, নির্বাচনী ও এসএসসি পরীক্ষার সূচি ভেঙে পড়েছে।
আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে, আর মাধ্যমিকের চলমান বার্ষিক ও নির্বাচনী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষকরা। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা সারা বছর প্রস্তুতি নিয়ে শেষ মুহূর্তে অনিশ্চয়তায় পড়েছে তারা।
প্রাথমিক শিক্ষকরা ৩ দফা—বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ, উচ্চতর গ্রেড সমস্যা সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবি—নিয়ে ২৭ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতিতে আছেন। একই সময়ে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকরা ৪ দফা দাবি—৯ম গ্রেডে এন্ট্রি, ক্যাডারভুক্তি, টাইমস্কেল ও পদোন্নতি—না মানায় আজ থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন। ফলে দুই স্তরের বার্ষিক ও নির্বাচনী পরীক্ষা স্থগিতের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষকরা বলছেন, বহুদিন ধরে আশ্বাস পেলেও বাস্তবায়ন হয়নি। দাবি মানা হলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও পরীক্ষা নিয়ে দ্রুত ফল প্রকাশে তারা প্রস্তুত। প্রাথমিক শিক্ষক নেতাদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে একদিনেই সমাধান সম্ভব।
সরকারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরীক্ষা বর্জন সরকারি চাকরি আইনের পরিপন্থি এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করছে। তারা দাবি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে। একইসঙ্গে ডিপিই ও মাউশি উভয়ই মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরীক্ষার সুষ্ঠু আয়োজন নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে।
অভিভাবকেরা বলছেন, দাবি থাকতে পারে, তবে বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পরীক্ষা বন্ধ হওয়া শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার। দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না এলে শিক্ষার্থীর মানসিক চাপ আরও বাড়বে।
মাউশির পরিচালক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীর স্বার্থ সবার আগে; পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং যৌক্তিক সমাধানে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।