চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পরীক্ষার একদিন আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সরেজমিনে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন নিয়ে পরীক্ষার হলে সত্যতা মিলে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নস্থ ফতেপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ওই স্কুলেও ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা চলমান। পরীক্ষা শুরুর দু একদিন পরই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠে।
অনুসন্ধানে নামলে দেখা গেছে, পরীক্ষার আগেরদিন রাতেই স্ব স্ব শ্রেণীর প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের হাতে চলে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের গ্রুপে গ্রুপে ভেসে উঠছে প্রশ্নপত্র। একসময়ে প্রকাশ্যে বিষয়টি জানাজানি হলেও কোন ব্যবস্থা নেননি স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা। প্রধান শিক্ষকসহ অন্যদের দাবি তারা কিছুই জানেন না।
জানতে চাইলে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সাজ্জাদ জানান, বিষয়টা শুনেছিলাম কিন্তু বিশ্বাস করিনি। আজ সত্যতা জানতে পারলাম। পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্র সবার কমন এসেছে তাই পরীক্ষাও খুব ভাল হচ্ছে বলে জানান কয়েকজন পরীক্ষার্থী।
এর আগে হল পরিদর্শনের বিষয়টি প্রতিবেদক প্রধান শিক্ষক শাহ আলমকে ফোন দিলে উনি শহরে জানিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মহসিনের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
ফতেপুর মেহেরনেগা স্কুলের দশম শ্রেণীর পরীক্ষার্থী মোঃ নাহিম বলেন, প্রতিদিন ওই স্কুলের প্রশ্ন আগেরদিন ফাঁস হয় বলে বন্ধুদের মাধ্যমে জেনেছি। বিষয়টি সবাই জানে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ড. সেলিম রেজা বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাকর এবং গর্হিত কাজ। এর জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী দায়ী। বিষয়টি অবগত হয়েই আগামিকালের পরীক্ষা স্থগিত এবং অবশিষ্ট বিষয়গুলোর জন্য নতুন প্রশ্ন তৈরি করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইসাথে পুরাতন প্রশ্নপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন বলেন, বিষয়টা অবগত হয়েছি। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক মহসিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন বই চুরির অভিযোগ উঠেছিল। তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদুল আলমের নির্দেশনায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি প্রেস থেকে বিপুল পরিমাণ চুরি হওয়া বই উদ্ধার করা হয়েছিল। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সুপারভাইজার মোসলেম উদ্দিন বাদি হয়ে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। তবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর মামলার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানান মামলার বাদি মোসলেম উদ্দিন।