নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। দীর্ঘদিন ধরে মেগাসিটি ঢাকাও বায়ুদূষণের কবলে। কিছু দিন আগে শহরটির বায়ুমান কিছুটা উন্নতির দিকে ছিল। কিন্তু সম্প্রতি শহরটির বাতাসে ফের বাড়ছে দূষণ।
আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, ২৪৫ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে রাজধানী ঢাকা। বায়ুমানের এ স্কোর ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঢাকার গড় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) প্রায়ই ১৫০-২০০ এর মধ্যে অবস্থান করছে, যা “অস্বাস্থ্যকর” হিসাবে বিবেচিত। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে PM2.5 ও PM10 এর মাত্রা বিপদসীমা ছাড়িয়ে যায়। শহরে নির্মাণকাজ, ইটভাটা, বর্জ্য দাহ, পুরোনো গাড়ির কালো ধোঁয়া এবং রাস্তার ধুলা এসবই দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণের কারণে ঢাকার মানুষের গড় আয়ু কমছে প্রায় ৫.৫ বছর। শ্বাসযন্ত্রের রোগ, হাঁপানি, ব্রংকাইটিস, হৃদরোগ, চর্মরোগসহ নানা জটিলতা দ্রুত বাড়ছে; সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শিশুরা, বয়স্করা এবং আগেই রোগে আক্রান্ত মানুষ।
নগর বিশেষজ্ঞদের মতে, দূষণ নিয়ন্ত্রণে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণ, যানবাহনের নির্গমন পরীক্ষা, ইটভাটা আধুনিকীকরণ, কঠোর পরিবেশ আইন প্রয়োগ এবং সবুজায়ন বাড়ানো এসব উদ্যোগ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, AQI বেড়ে গেলে অপ্রয়োজনে বাইরে না বেরোনো, প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করা, ঘরের ভেন্টিলেশন বজায় রাখা এবং শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার।
পরিবেশবিদরা বলছেন, ঢাকার বায়ুমান রক্ষা এখন সময়ের দাবি। নাগরিক সচেতনতা, সরকারী কঠোর পদক্ষেপ এবং পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করলে শহরকে দূষণমুক্ত নগরীতে রূপান্তরিত করা সম্ভব।