ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে আসা ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ফাং-ওয়াং (Fung-Wong) দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে বর্তমানে সুপার টাইফুনে রূপ নিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে দেশটির উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে ইতোমধ্যেই প্রবল বর্ষণ, ধ্বংসাত্মক ঝোড়ো হাওয়া এবং জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এক লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ফিলিপাইন আবহাওয়া অধিদপ্তর (PAGASA) জানিয়েছে, রোববার রাতেই সুপার টাইফুন ফাং-ওয়াং আঘাত হানতে পারে লুজন দ্বীপের অরোরা প্রদেশে। ইতোমধ্যেই কাটানডুয়ানেস, কামারিনেস নরতে ও কামারিনেস সুর অঞ্চলে সর্বোচ্চ সতর্কতা ৫ নম্বর বিপদসংকেত জারি করা হয়েছে। রাজধানী ম্যানিলা ও আশপাশের এলাকায় কার্যকর রয়েছে ৩ নম্বর বিপদসংকেত।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এবিএস-সিবিএন নিউজ প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কাটানডুয়ানেস অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিতে এলাকা প্লাবিত এবং ঘূর্ণিঝড়ের তীব্র বাতাসে গাছপালা দুলছে। ভয়ঙ্কর শব্দে বাতাসে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক।
ফিলিপাইন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (CAAP) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতার কারণে তিন শতাধিক অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ফিলিপাইন কোস্টগার্ড প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, কামারিনেস সুরে আশ্রয়প্রার্থীরা ব্যাগ ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে নৌকা থেকে ট্রাকে উঠছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যমতে, ফাং-ওয়াংয়ের বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার, আর দমকা হাওয়া ২৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ইতোমধ্যেই পূর্ব ভিসায়াসের বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
এর কয়েক দিন আগেই ফিলিপাইন আঘাত হেনেছিল টাইফুন কালমেগি, যা অন্তত ২০৪ জনের প্রাণহানি ঘটায় এবং দেশজুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পরে সেটি ভিয়েতনামে প্রবেশ করলে সেখানে আরও পাঁচজন নিহত হন এবং উপকূলীয় এলাকায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়।
ফাং-ওয়াংয়ের গতিপথ ও প্রভাব সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট দিতে ফিলিপাইন আবহাওয়া দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাগরের উষ্ণতা বাড়ার কারণে এ বছরের টাইফুন মৌসুমে আরও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।