বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫ ২ শ্রাবণ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫
চুরির পাঁচ ঘন্টার মধ্যেই শিশু উদ্ধার
এনায়েত খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ: শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৭ AM

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুরির পাঁচ ঘন্টার মধ্যেই তিনদিন বয়সী শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া ওই শিশুকে সদর উপজেলা সিন্দুরা থেকে বিকেল ৫টার দিকে উদ্ধার করা হয়। এসময় তানিয়া বেগম নামে এক নারীকে আটক করা হয়।

আটককৃত তানিয়া সদর উপজেলা সিন্দুরা এলাকার বাসিন্দা। তানিয়াই বোরকা পড়ে ওই শিশুকে হাসপাতাল থেকে কৌশলে চুরি করে বাড়ি নিয়ে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ওই শিশুকে তার মায়ের কোলে তোলে দেন সদর থানা পুলিশ।  

শিশুর পরিবার, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চার বছর আগে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের তেলিনগর গ্রামের ফরিদ মিয়ার সঙ্গে একই উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ার বাবুল মিয়ার মেয়ে রেখা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের এরফান মিয়া নামে দেড় বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গত সোমবার প্রসবজনিত ব্যাথা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রেখা আরেকটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বোরকা পড়ে ও মুখ ঢেকে হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি ওয়ার্ডে যান তানিয়া। সেসময় শয্যার পাশে গিয়ে রেখাকে শুয়ে থাকতে দেখেন। তানিয়ার স্বামী একজন ধনী লোকজন এবং সম্প্রতি অসহায়দের মাঝে এক লাখ টাকা বিতরণ করেছেন বলে রেখা ও তার দাদী জুবেদা খাতুনকে বলেন তানিয়া।

এক পর্যায়ে ফল কেনার জন্য জুবেদাকে জোর করে ৫০০টাকা দেন তানিয়া। পরে শয্যায় রেখার পাশে বসে তিনদিন বয়সী শিশুর ঠান্ডা লেগেছে বলেন। এক পর্যায়ে ডাক্তার দেখানোর  কথা বলে রেখার কাছ থেকে কৌশলে শিশুকে নিয়ে যান তানিয়া। রেখার বোন তিশা আক্তারকে সঙ্গে করে নিয়ে যায় তানিয়া। দুপুর সোয়া একটার দিকে শিশুকে নিয়ে পুরাতন জেল রোডের সন্ধ্যানী সেন্টার ফর চাইল্ড কেয়ার এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান তানিয়া। সেখানে ৫০০টাকা দিয়ে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এস এম আবদুর রহিমকে দেখানোর জন্য একটি টিকেট কাটেন তানিয়া। পরে কৌশলে রেখার বোন তিশাকে শৌচাগারে পাঠিয়ে সেখান থেকে দ্রুত সরে যান তানিয়া। তিশা শৌচাগার থেকে বের হয়ে তানিয়াকে না পেয়ে চেঁচামেচি শুরু করলে স্থানীয়রা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে যেতে বলেন। তিশা হাসপাতালে গিয়ে বোন রেখাকে বিষয়টি খুলে বলেন। খবর পেয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও পুলিশ স্ত্রী ও প্রসূতি ওয়ার্ডে গিয়ে রেখা, রেখার বোন তিশার সঙ্গে কথা বলেন। তিশাকে সঙ্গে নিয়ে সদর থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ সদস্যদের নিয়ে চুরি হওয়ার শিশুটির খোঁজ শুরু করেন। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সিন্দুরা এলাকার বাড়ি থেকে শিশুকে উদ্ধারসহ তানিয়াকে আটক করে পুলিশ। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেন পুলিশ।

শিশুকে ফিরে পেয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন রেখা বেগম। তাঁর দুই চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরছিল। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাচ্চাডারে ফিরা পাইতে আল্লার কাছে বার বার দোয়া করতাছিলাম। পুলিশরে অনেক ধইন্যবাদ। বাচ্চাডার হেরা বাইর কইরা আনছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিশু চুরি করা ওই মহিলার ঠিকানা সনাক্ত করা হয়। আমার ওই মহিলার একটি মুঠোফোন নাম্বার পেয়ে যাই।

-বাবু/এ.এস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত