অপসংস্কৃতি রুখে দিয়ে সুন্দর ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ড চর্চার আহ্বান জানিয়ে ‘বসন্ত উৎসব-১৪২৯’ উদযাপন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রথমবারের মতো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে নানা বর্ণিল আয়োজেনের মাধ্যমে এ দিনটি উদযাপন করে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজে এই উৎসব শুরু হয়।
দিনব্যাপী চলা উৎসবে ছিল বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশনায় গান, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তি। সকালে উৎসবের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। উদ্বোধনী বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এজন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চায় আমাদের নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি সৃজনশীল হতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সমবেত দর্শকদের বসন্তের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন ঋতু ঘুরে ঘুরে আসে। আমরা বাঙালি। আমাদের সব ঋতুর জন্য গান আছে, কবিতা আছে, বিভিন্ন ঋতুর রঙ আছে। নানা ঋতুর নানা ধাচ আছে। সব মিলিয়ে আমাদের কাছে বার বার একেকটা ঋতু আসে আর জানিয়ে দেয় আমরা বাঙালি। আমাদের সেই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাকে আরও বেগবান করতে হবে। তাহলেই আমাদের বিশ্ব মানব হবার, বিশ্ব নাগরিক হবার প্রচেষ্টা সফল হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, বসন্ত সুন্দর নিয়ে এসেছে, সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে, সৃজনশীলতা নিয়ে এসেছে। বসন্ত আমাদের নতুন সৃষ্টির উল্লাস নিয়ে এসেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে বসে যে দেশের মানচিত্র এঁকেছেন, তাঁর শিশুসন্তানের মুখশ্রী না দেখে বাংলাদেশের মুখশ্রী এঁকেছেন। সেই বাংলাদেশ অপার সবুজে, সম্ভাবনায়, সৃজনশীলতায় অনন্য হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে বসন্তকে স্বাগত জানিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, শামা রহমান। আর আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মুস্তাফা। অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন র্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিস। অনুষ্ঠানে গানের পালায় সুরের ঝরনাধারা বইয়ে দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাসন্তী ও লাল রঙের শাড়ি, সালোয়ার কামিজ পরে ক্যাম্পাসে আসেন। কলেজ ক্যাম্পাস গোলাপ, গাঁদা, মল্লিকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। বসন্ত উৎসব উপলক্ষে কলেজ ক্যাম্পাসে রাজধানীর কয়েকটি কলেজ বসন্ত মেলার আয়োজন করে। সেখানে পিঠাপুলি, পুতুলনাচ, নাগরদোলা, হস্তশিল্প ও মুক্তিযুদ্ধের বইয়ের স্টল খোলা হয়। শিক্ষার্থী ছাড়াও বিপুলসংখ্যক দর্শন স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।
বাবু/জেএম