পবিত্র রমজান মাস দেশের সকল মুসলিম বান্দাদের জন্য নিয়ে আসে এক শান্তিময় বার্তা। এ মাসের প্রতিটি ইবাদতের প্রতিদান বহুগুনে বেড়ে যায়। তেমনি প্রত্যেকটি পাপাচার মানুষকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগও এনে দেয় পবিত্র এই রমজান মাস। এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার সমাহারে পবিত্র এই রমজান মাসের মাহাত্ম্য ও মর্যাদা বহুগুন বৃদ্ধি করে দেয়।
চলুন তাহলে দেরি না করে আজকে আমরা জেনে আসি পবিত্র রমজান মাসের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে :
১. পবিত্র রমজান মাস হল পাপ মোচন ও ক্ষমা লাভের মাস। ক্ষমা লাভের এমন সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যে ব্যক্তি নিজের পাপ সমূহ ক্ষমা করাতে পারেনা তার থেকে হতভাগ্য এই দুনিয়াতে আর নেই। হাদিস শরীফে সেই সব ব্যক্তিদের জন্য বদদোয়া করা হয়েছে যারা নিজেদের শোধরাতে পারেনা এই পবিত্র মাসে।
এই মর্মে এক হাদিস হতে বর্ণিত, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, 'পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজান মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ সমূহকে মুছে দেয় যদি সে কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে'। (মুসলিম ২৩৩ )
২. বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র রমজান মাস প্রধানত ফরজ রোজা ও তারাবিহর বার্তা নিয়ে আগমন ঘটে। আর এ দুটি হল রমজান মাসের বিশেষ আমল। তাই আমাদের মুসলিম বান্দাদের উচিত এই দুই বিষয়ে আন্তরিকতার সাথে যত্নবান হওয়া।
আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন, 'হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতি, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো'। (সূরা বাকারা ১৮৩)
৩. মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র এই মাসে প্রতিরাতে অসংখ্য জাহান্নামি কে মুক্তি দান করে থাকেন। মহিমান্বিত এই পবিত্র রমজান মাস হল জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও দোয়া কবুলের মাস।
তাই আমাদের সকলের কর্তব্য বেশি বেশি নেক আমল ও তাওবা ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। এই মর্মে এক হাদিস হতে বর্ণিত, হযরত জাবির (রা.) বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা রমজান মাসে প্রতি ইফতারের সময় অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। প্রতি রাতেই তা হয়ে থাকে'। (ইবনে মাজাহ : ১৬৪৩)
৪. আল্লাহর নিকট থেকে পবিত্র রমজান মাসের আরেকটি বিশেষ দান হলো এক হাজার রাত অপেক্ষা উত্তম লাইলাতুল কদর। মহান আল্লাহ তায়ালা এ রাত সম্পর্কে এরশাদ করেছেন, 'লাইলাতুল কদর এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।
এ রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ তাদের পালনকর্তার আদেশক্রমে প্রত্যেক কল্যাণময় বস্তু নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন। যে রাত পুরোটাই শান্তি যা ফজর হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে'। (সূরা কদর : ৩-৫ )
৫. রমজান মাসের আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এ মাস মুমিনের নেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধির মাস এবং আখিরাতের সওদা করার শ্রেষ্ঠ সময়।
পবিত্র রমজান মাস হল বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের সমন্বয়ে এক মহিমান্বিত মাস।
এই মাস হল জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের মাস। এই মাসের ফজিলত বলে শেষ করা যাবেনা। তাই আমাদের প্রত্যেক মুসলিম বান্দাদের উচিত পবিত্র এই রমজান মাস এ নিজেদের চরিত্র ও গুণাবলী কে উত্তম রূপে গড়ে তোলা এবং আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করা।
মহান রব্বুল আলামিন বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহকে মহিমান্বিত এ রমজান মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য বোঝার ও সেই অনুযায়ী যথাযথ আমল করার তৌফিক দান করুন।
(আমিন )
বাবু/পিকু