ছোটরা ঈদের নামাজ পড়ার পর বড়দের সালাম করে সালামি বা ঈদি হিসেবে টাকা বা উপহার নেয়। এ সংস্কৃতি বহুকাল ধরে চলে আসলেও তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। সালামি বা ঈদির ঐতিহ্য ইসলামে গ্রহণযোগ্যতা আছে কি না এবং এটি কি মুসলিম সংস্কৃতির অংশ তাই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকছে আজকের আয়োজনে।
ঈদ উদযাপনের একটি অংশ জুড়ে রয়েছে ঈদি, ঈদিয়া বা সালামি। এর বাংলা অর্থ উপহার। সাধারণত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময় বড়রা ছোটদের এটি দিয়ে থাকে। কিন্তু তা ইসলাম সমর্থন করে কিনা তা নিয়ে রয়েছে নানা জনের নানা মত।
বর্তমানে সালামি এখন আর শুধু পরিবারের সদস্য বা নির্দিষ্ট বয়স সীমার মধ্যে আটকে নেই। বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এখন আনন্দের সঙ্গে সালামি আদান প্রদান করে থাকেন।
ঈদি বা সালামি বলতে শুধু টাকা বোঝায় না। বিভিন্ন ধরনের উপহারও সালামি বা ঈদি হতে পারে। কিন্তু অনেকেই ঈদি বা সালামি বলতে নগদ চকচকে নতুন অর্থ উপহারই বোঝেন।
নগদ অর্থে নবীজি কিংবা তার সাহাবিরা কখনো কাউকে ঈদি বা সালামি দিয়েছেন কিনা এমনটা জানা যায়নি। তবে নবীজি বলেছেন, একে অন্যের মধ্যে উপহার আদান-প্রদান করতে। এতে করে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও সৌহার্দ বাড়ে।
এ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ঈদিকে নেতিবাচকভাবে ইসলামে নেওয়া হয়নি। তবে সালামের মাধ্যমে ঈদি নেওয়ার বিষয়টির বিপক্ষে অনেকেই। কারণ পা স্পর্শ করে সালাম করার সময় মাথা নিচু করে ঝুঁকে পড়তে হয়।
এ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বাবা-মা বা বড় ভাই বোনদের ক্ষেত্রে এটি জায়েজ হলেও সবার ক্ষেত্রে তা করাটা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ।
ঠিক কবে থেকে ঈদির দেওয়ার প্রথা চালু হয়েছিল তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে যুগে যুগে সময়ের বদলে এটি এখন মুসলিম সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে।
তাই চেষ্টা করুন পরিবারের আপন ও গুরুজনদেরই শুধু পা স্পর্শ করে সালাম করার মাধ্যমে ঈদি নিতে। অন্যদের ক্ষেত্রে মৌখিক সালাম ও কোলাকুলির মাধ্যমে ঈদি বা সালামি নিতে পারেন। সেই সঙ্গে সতর্ক থাকুন ঈদি দেওয়া বা নেওয়ার মাধ্যমে এর পরিমাণ নিয়ে যেন কেউ নিজেকে বড় জাহির করার প্রয়াস না করে।
-বাবু/এ.এস