বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫ ১ শ্রাবণ ১৪৩২
বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
আজও অবহেলিত শের-ই-বাংলার জন্মস্থান, নেই কোন স্মৃতি
খলিলুর রহমান, রাজাপুর (ঝালকাঠি)
প্রকাশ: বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩, ৩:৩৩ PM আপডেট: ২৬.০৪.২০২৩ ৩:৩৬ PM
অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও বাংলার বাঘ খ্যাত শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হকের ৬১তম মৃত্যুবাষিকী। ১৯৬২ সালের এই দিনে ৮৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তার বাবা ওয়াজেদ আলী একজন প্রখ্যাত আইনজীবী এবং তার মাতা বেগম সৈয়েদুন্নেছা একজন ‘গৃহিণী’ ছিলেন। মাত্র কয়েক বছর আগেও শের-ই- বাংলার জন্মস্থানে তাঁর বহু জন্মস্মৃতি দেখা গেলেও তা এখন আর দেখা যাচ্ছে না। অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে শের-ই- বাংলার জন্ম ভবনটি। 

বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে রাজাপুরের সাতুরিয়ার মিয়া বংশের জমিদার বাড়ি এটি। এ বাড়িতেই জন্মেছিলেন শের-ই-বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক। শৈশবের বেশির ভাগ সময় তিনি কাটিয়েছেন তাঁর এই মামা বাড়িতেই। এখানে ঘাট বাঁধানো পুকুরে গোসল করা, পাশের নদীতে সাঁতার কাটা, গাছ থেকে ডাব পেড়ে খাওয়াসহ অনেক স্মৃতি পড়ে আছে এই বাড়িতে। তবে তাঁর জন্মস্থান সাতুরিয়ার মিয়া বাড়ির সেই দালান জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। মাত্র কয়েক বছর আগেও শের-ই-বাংলার ব্যবহৃত বহু আসবাবপত্র এই বাড়িতে পড়ে থাকতে দেখা গেলেও মূল্যবান ঐসব জিনিসপত্র আজ আর দেখা যাচ্ছে না। এমনকি তাঁর প্রতিষ্ঠিত সাতুরিয়া এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিরও বেহাল দশা। ভবন ও বেঞ্চ সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জিত।

শের-ই-বাংলার বাল্যকালের শিক্ষাজীবন কেটেছে রাজাপুরের সাতুরিয়ায়। শিক্ষা জীবন শেষে শের-ই-বাংলা রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রাখেন এবং রাজনীতিতে তিনি সফলতা লাভ করেন। তিনি অভিবক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে অগণিত খেটে খাওয়া মানুষের জমিদারদের করাল গ্রাস থেকে দিয়েছেন মুক্তি। এছাড়া তিনি অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেন। যার ফলে বাঙালি জাতি শিক্ষার আলো দেখতে পেয়েছে। 

শের-ই-বাংলার জন্মস্থান ও তার জন্মস্মৃতি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিনিয়ত বহু পর্যটক এখানে আসেন। তবে তারা হতাশ হয়ে ফিরে যান তার জন্মস্মৃতি আর জরাজীর্ণ ধ্বংসস্তুপ দেখে। নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা এখানে বেড়াতে আসেন শের-ই-বাংলার জীবন ইতিহাস সম্পর্কে দেখতে শুনতে আর জানতে। এখানে ঘুরতে আসা পর্যটক রুমানা পিয়া জানান, আমরা দূর দূরান্ত থেকে এখানে ঘুরতে আসি শের-ই-বাংলার জীবন এবং তার ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য। কিন্তু এখানে এসে এই মহান নেতার জন্ম স্থানের জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে আমাদের হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে।

প্রায় দেড়শত বছর পরে হলেও প্রত্নতত্ব বিভাগ একটু নজর দিয়েছেন, ভবনের যে রুমটিতে শের-ই-বাংলা জন্ম গ্রহণ করেছিলো সেই আঁতুর ঘরের ভিতরটার কিছু অংশ বছর তিনেক পূর্বে সংস্কার করেছে এবং ভবনের বাহিরে একটি স্মৃতিস্তম্ভ করেছে যাহাতে তার জীবনী সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হয়েছে। স্থানীয়সহ দূর দূরান্ত থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের দাবি এখানে শের-ই-বাংলার নামে একটি স্মৃতি জাদুঘর, একটি লাইব্রেরি এবং ওয়াশ রুমসহ তার জন্মভবনটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খান বলেন, ‘শের-ই-বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হকের জন্ম স্মৃতি রক্ষা এবং ওখানে জাদুঘরসহ আরো কিছু নির্মাণ করার দাবি রয়েছে। আপনারা জানেন যে, প্রত্নতত্ব বিভাগ ইতো মধ্যেই ঐ বভনটি তারা নিয়ে নিয়েছে। শের-ই-বাংলা যে ভবনে জন্মগ্রহণ করেছেন সেই ভবনের আতুর ঘরটি প্রত্নতত্ব বিভাগ সংস্কার করেছে। এবং ভবনটির সামনে স্মৃতিস্তম্ভ করেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য কাজও করা হবে।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  শের-ই-বাংলা  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত