সাধারণত কোনো মুসলিম মারা গেলে আমরা ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়ে থাকি। এর অর্থ হলো—অর্থ ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর কাছ থেকেই এসেছি এবং আমাদেরকে তার কাছেই ফিরে যেতে হবে’। অমুসলিমের মৃত্যুতেও ‘ইন্নালিল্লাহ’ বলা যাবে। (বিন বায, ফতোয়া নুরুন আলাদ-দারব ৩৭৫ পৃ: ১৪/৩৬৪-৬৫)
কারণ প্রত্যেককে আল্লাহর নিকটই ফিরে যেতে হবে। তাই অমুসলিমের মৃত্যুতে ইন্নালিল্লাহ বলতে কোনো অসুবিধা নেই। এমনকি কোনো অমুসলিম প্রতিবেশী বা উপকারকারী মারা গেলে তার জন্য ইসলামে সমবেদনা প্রকাশ করারও অবকাশ আছে। এক্ষেত্রে তার পরিবারস্থ লোকদেরকে সান্ত্বনা দেওয়া বা তাদের সহযোগিতা করা যাবে। (তাফসিরে রুহুল মাআনি: ২/২৩ তাফসিরে কুরতুবি: ২/১১৯ ও ১৮/৪০; আহকামুল কোরআন: ৫/৪৫ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ১৩/৫৬৫ ও ৭/৩৭৮; মুসান্নাফ আবদুর রাজজাক: ৬/৪২)
তবে অমুসলিমের মৃত্যুতে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা যাবে না। মুসলিম উম্মাহর কোনো ফকিহ বা আলেমের এ বিষয়ে ভিন্নমত নেই। (আলমাজমু: ৫/১২০)
কেননা আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন- مَا كَانَ لِلنَّبِیِّ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْ یَّسْتَغْفِرُوْا لِلْمُشْرِكِیْنَ ‘নবী ও ঈমানদারদের পক্ষে মুশরিকদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা সঙ্গত নয়..।’ (সুরা তাওবা: ১১৩)
তাদের জন্য দোয়া করতে নিষেধ করা হলেও তাদের মৃত্যুতে গালি দেওয়া কিংবা জাহান্নাম কামনা করা কোনো হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। সুতরাং এ ধরণের কোনো বদভ্যাস কিংবা বিশ্বাস কারো থাকলে দ্রুত নিজেকে সংশোধন করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, নবীজি (স.) ইহুদির মৃতদেহ দেখেও দাঁড়িয়ে ছিলেন। সহিহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে, ‘..মহানবী (স.)-এর পাশ দিয়ে একসময় একটি লাশ নেওয়া হয়েছিল। তখন তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। তাঁকে বলা হলো, এটা তো এক ইহুদির লাশ। তখন তিনি বলেন, ‘তা কি প্রাণ নয়?’ (বুখারি: ১২৫০)
উল্লেখ্য, ইন্নালিল্লাহ.. শুধু মৃত্যুর খবরে নয়, যেকোনো বিপদ-মসিবতেও পড়া যায়। এটি আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করারও বড় মাধ্যম। পবিত্র কোরআনেই এর উল্লেখ রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে- الَّذِیۡنَ اِذَاۤ اَصَابَتۡهُمۡ مُّصِیۡبَۃٌ ۙ قَالُوۡۤا اِنَّا لِلّٰهِ وَ اِنَّاۤ اِلَیۡهِ رٰجِعُوۡنَ ‘যারা তাদের ওপর বিপদ আসলে বলে, আমরা তো আল্লাহরই। আর নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’ (সুরা বাকারা: ১৫৬)
-বাবু/এ.এস