গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মাস্টারবাড়ি এলাকার মেঘনা নিট কম্পোজিটের শ্রমিকেরা নিয়মিত বেতন ভাতা প্রদান, নাইট বিল প্রদান, কর্মকর্তাদের নমনীয় আচরণ, অসুস্থতাজনিত ছুটি ও গর্ভকালীন ছুটির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। অন্দোলনের মুখে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় বৃহষ্পতিবার (৮ জুন) দিনব্যাপি একই কারখানার অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সাবলাইন গ্রীনটেক্স লিমিটেডের সহস্রাধিক শ্রমিক সাথে নিয়ে তারা বিক্ষোভ করে।
মেঘনা নিট কম্পোজিট লিমিটেডের শ্রমিক নোমান, শিপন, লাইলীসহ অন্যান্যরা জানান, কারখানাটি বিগতদিনে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন ভাতা পরিশোধ করে আসছিল। কিন্তু গত ৬ মাস আগে কারখানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। তারা যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো মাসেই প্রথম সপ্তাহে বেতন পরিশোধ করছে না। কোনো মাসেই আন্দোলন ছাড়া বেতন আদায় করা যাচ্ছে না। বিলম্বে বেতন দেওয়ায় তারা বাড়িভাড়া ও দোকানের বকেয়া যথাসময়ে পরিশোধ করতে পারছে না।
শ্রমিকরা জানায়, রাতে ডিউটি করা হলে নাইট বিল দেওয়া হয় না। অসুস্থতাজনিত ছুটি ও গর্ভকালীন ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হয় না। গর্ভকালীন ছুটির দাবি করলে নেতিবাচক কথাবার্তা বলে সন্তান ধারণ করায় তিরষ্কার করা হয়। এসব আচরণের প্রতিবাদে বুধবার কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করে শ্রমিকেরা। এসময় কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধোর করা হয়। পরে আন্দোলনের মুখে বিকেলে বেতন ভাতা প্রদান করা হলে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ স্থগিত করে।
এদিকে, বৃহষ্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে কারখানায় গেলে গেটে অনির্দিষ্টকালের ছুটির নোটিশ দেখতে পায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা কারখানাটির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অনতিদূরে আসপাডা এলাকার সাবলাইন গ্রীনটেক্স লিমিটেডের গেটে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও আঘাত শুরু করে। এসময় সাবলাইন গ্রীনটেক্স লিমিটেডের কমপক্ষে এক হাজার শ্রমিক তাদের সাথে বিক্ষোভে যোগ দেয়। কারখানার সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সময় শ্রমিকরা জানায়, ঈদকে সামনে রেখে বেতন বোনাস না দেওয়ার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ ফন্দি আঁটছে। বিক্ষোভ চলাকালে শিল্প, হাইওয়ে ও শ্রীপুর থানা পুলিশের সদস্যরা নিরপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
এ ব্যাপারে মেঘনা নিট কম্পোজিট লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাকসুদ আলম জানান, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। তাদের অন্যান্য অভিযোগগুলো সঠিক নয়। বুধবার (৭ জুন) কারখানার সামনে হাঙ্গামা, ভাঙচুর ও কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধোর করায় উৎপাদনের অনুকূল পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে। ফলে বেতন পরিশোধের পর কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরিবেশ ফিরে এলে নোটিশের মাধ্যমে শ্রমিকদের অবহিত করা হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলম জানান, বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা যাতে ভাঙচুর বা মহাসড়ক অবরোধ করতে না পারে সেজন্য পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তাদের দাবির বৈধতার ভিত্তিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসার ব্যবস্থা চলছে।
বাবু/জেএম