স্বরূপকাঠিতে শান্তিরহাট-কামারকাঠি সড়ক নির্মাণে চরম অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইটের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে পোড়ামাটির চেয়ে খারাপ ইট। শান্তিরহাট বাজার থেকে পূর্ব কামারকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে জগন্নাথকাঠী- ইদিলকাঠী সড়কের সাথে সংযোগ সড়ক কার্পেটিং দারা নির্মাণ কাজে অত্যান্ত নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।
এমন অভিযোগ পেয়ে শনিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাজের জন্য যে ইট আনা হয়েছে তা পূর্বে অন্য কাজে ব্যবহার করা। এতোটাই নিম্নমানের যার নাই কোন নম্বর (হাত দিয়ে চাপদিলেই ভেঙে যায়), এলাকার ভাষায় উনুনের পোড়ামাটির চেয়েও নিম্নমানের। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম ইফতি এন্টারপ্রাইজ। যার মালিক ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম মিরাজ।
এলাকাবাসী জানান, এলাকার প্রভাবশালী খলিলুর রহমান কাজের উপ-ঠিকাদার। আপনারা মালামাল দেখে বিবেচনা করুন। এটা কোন ইটের মধ্যে পড়ে কী না। এলাকার মো. শাহীন কথা বলার জন্য কাছে এলেও তার কথাগুলো রেকর্ড করার সময় তিনি চারদিক তাকাচ্ছিলেন কেউ দেখে না ফেলে। এসময় খলিলুর রহমানের সহযোগী জাহিদ আকন মোটরসাইকেলে করে কাজের স্থানে আসেন। তাকে দেখেই সকলে চলে যান। জাহিদ আকন খলিলুর রহমানকে ফোন দেন। কিছু সময় পরে খলিলুর রহমান আসেন। তিনি জানান মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে এনে তিনি কাজ করছেন।
ইটের মান এতো খারাপ কেন? প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা অনেক পুরানো কাজ আর এখন ইটের দাম অনেক বেশি তাই। এগুলোকে ইট বলা যায় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ইটগুলো একটু খারাপ পড়েছে।
আজকে কাজের সাইটে নতুন ইট আসছে বলে সেই ইট দেখাতে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু পুরানো ইটের চেয়ে নতুন ইটের অবস্থা আরও বেশি খারাপ। ইটগুলো ভাঙা/গুড়া এমন কেন? জানতে চাইলে খলিল বলেন, ট্রলার থেকে তোলার সময়ই গুড়ো হয়ে গেছে। এসময় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলতে চাইলে তারা ধীরে ধীরে সরে পড়েন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, এর আগে ব্রিজের অপর পারে যে কাজ হয়েছে সেখানেও পুরানো ইট ছিল সেই ইট ভেঙে রেখে, পঁচা ইট দিয়ে কাজ করা হয়েছে। রাস্তার পুরানো ইটগুলো কিছুটা ভালো তাই সেগুলো উপরে দেওয়ার জন্য রেখে দিয়েছেন। এলাকার এক বৃদ্ধ মহিলা বলেন, এগুলো ইট না পোড়ামাটি। কথা বলার জন্য ঐ কাজের মূল ঠিকাদার মো. মিরাজুল ইসলামের ম্বর ফোনে বার বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শেখ তৌফিক আজিজের সাথে তার অফিসে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদ ও এলাকার লোকের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠিয়েছি। তিনি আরও জানিয়েছেন ওইখানে যে খারপ ইট আনা হয়েছে। উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে খারাপ ইটগুলো অপসারণের জন্য বলা হয়েছে। আমি বিকেলে সরেজমিনে যাবো, সব খারাপ ইট অপসারণের জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দিব। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। কোন অবস্থাতে খারাপ ইট ব্যবহার করতে দিব না।
বাবু/জেএম