পূর্ব বিরোধের জেরে প্রাণ ভয়ে অনেকটা আত্মগোপনেই ছিলেন সুমন৷ কিন্তু মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাকে দেখতে রবিবার ফিরেছিলেন নিজ এলাকায়৷ আর সেই রাতেই সুমনকে নির্দয়ভাবে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা৷ এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার পুরুষাঙ্গ ও হাতের কবজি কেটে নেয় সন্ত্রাসীরা।
রোববার (১১জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কালাবাদশা পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত সুমনকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করানো হয়। তার আঘাত গুরুতর হওয়ায় দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সুমনের শরীরের প্রতিটি স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এ চিহ্ন রয়েছে। ইতিমধ্যে তার শরীরে দু’দফা অপারেশন করা হয়েছে বলে চিকিৎসক ও স্বজনরা জানিয়েছে। চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় লাতু মিয়ার ছেলে সন্ত্রাসী মো. মোহসেন ও মোমেন শাহ কালু নামে দুই সন্ত্রাসী সুমনকে কুপিয়ে আহত করে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে হাটহাজারী থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- মো. ইকবাল, আবদুল ছালাম ও শিউলি আক্তার। এ ঘটনায় সুমনের বড়ভাই আতাউল গনি লিটন বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আহত সুমন স্থানীয় সন্ত্রাসী মোহছেন ও মোমেন শাহ কালুর সৎ বোনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। ফলে মোহসেন ও কালুদের কাছ থেকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার হয় সুমনসহ অন্যরা। এছাড়াও কয়েক বছর আগের মোহসেন ও কালুদের এক ভাইকে কুপিয়ে দুর্বৃত্তরা করে। এ নিয়ে মোহসেন কালুরা সুমনকে সন্দেহ করত। এসব নিয়ে সুমন ও মোহছেন-কালুদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। মোহছেন ও তার ভাইদের ভয়ে সুমন এলাকা ছেড়ে খাগড়াছড়িতে চাকরি করতেন।
মায়ের অসুখের খবর পেয়ে রোববার মাকে দেখতে নিজ বাড়িতে আসেন। বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজার যাওয়ার সময় রাস্তায় সুমনকে একা পেয়ে মোহছেন ও কালু তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ এগিয়ে যাওয়ার সাহস পায়নি। পরে সুমনের বড়ভাই জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯ কল দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চান। পরে হাটহাজারী সার্কেলের নেতৃত্বে পুলিশের কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সুমনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ছালাম ও মোহছিনের ভাই ইকবাল ও তার ভাবি শিউলি আক্তারকে গ্রেফতার করে।
হাটহাজারী থানার ওসি রুহুল আমিন বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত সুমনকে উদ্ধার করে৷ এরপর এলাকায় অভিযান চালুয়ে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্তসহ অন্যান্য গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
বাবু/জেএম