বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫ ১২ আষাঢ় ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫
শিশুর গর্ভবতী হওয়ার ভুল রিপোর্ট
ডোমারে ক্লিনিক বন্ধের দাবিতে অবরোধ
রতন কুমার রায়, ডোমার (নীলফামারী)
প্রকাশ: সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩, ৬:১৬ PM
নীলফামারীর ডোমারে ১৩ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীর গর্ভবতী হওয়ার ভুল রিপোর্ট দেওয়ার প্রতিবাদে একটি ক্লিনিক তিন ঘন্টা অববোধ করে রাখে এলাকাবাসী।

সোমবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা হতে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ মাঠ সংলগ্ন ডোমার জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি অবরোধ করে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, মাদ্রাসা পড়ুয়া ১৩ বছর বয়সী এক শিশু গত  রবিবার বিকালে পেটে ব্যাথা অনুভব করলে ডোমার জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় স্বজনরা। ওই ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাফি ও প্রসাব পরিক্ষা করে শিশুটি গর্ভবতী বলে রিপোর্ট দেয়। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরিবারের লোকজনের মাথায় বাঁজ ভেঙে পড়ে। অবিবাহিত এতো ছোট একটি মেয়ে কিভাবে গর্ভবর্তী হয়? রাতে তারা অন্য আরো দু’টি ক্লিনিকে গিয়ে একই পরিক্ষা করে জানতে পারে, তাদের মেয়ে গর্ভবর্তী না।

মেয়েটির বড় বোন বলেন, আমার বোন ওই রিপোর্ট শুনার পর শুধু কাঁন্না করছে। কোন খাওয়া দাওয়া করছে না। সে অস্বাভাবিক আচরণ করায় আমরা সারারাত তাকে পাহাড়া দিয়েছি। কিন্তু সে মেনে নিতে পারছে না বিষয়টি।

মেয়েটির নানী বলেন, পরিক্ষা নিরিক্ষার পর ডিএনসি করার জন্য ক্লিনিকের লোকজন আমার কাছে সাড়ে তিন হাজার টাকা চেয়েছে। গরিব মানুষ এতো টাকা জোগাড় করতে না পারায় ডিএনসি করতে পারি নাই। এলাকাবাসী অনেকে আবার অন্য ক্লিনিকে পরিক্ষার করার কথা বললে, আমরা আরো দু’টি ক্লিনিকে পরিক্ষা করে উল্টো রিপোর্ট পাই। পরে জানতে পারি ওই ক্লিনিকে নাকি ডাক্তার থাকে না। নার্স ও ওয়ার্ডবয় দিয়ে পরিক্ষা ও অপারেশন করা হয়।

মেয়েটির মামা বলেন, বিভিন্ন মানুষের মাধ্যমে মিমাংসা করার জন্য আমাকে প্রস্তাব দিয়েছে। আমি ওই ক্লিনিকটি বন্ধের দাবি করছি। ডোমার জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর ইসলাম বলেন, ডাক্তার নিহারঞ্জন সাহা আলট্রাসনোগ্রাফি করেছে। আর প্যাথলোজি ট্যাকনোলোজিস্ট লক্ষন রায় প্রসাব পরিক্ষা করে গর্ভবতী হওয়ার রিপোর্ট দিয়েছে। হয়তো তারা ভুল রিপোর্ট দিয়েছে।

ডাক্তার নিহারঞ্জন সাহা বলেন, হয়তো মেশিনের সমস্যার কারণে আলট্রাসনোগ্রাফির ভুল রিপোর্ট এসেছে। ট্যাকনোলজিস্ট লক্ষন রায় বলেন, ওই ক্লিনিকে আমি কোন প্রসাব পরিক্ষা করি নাই। হয়তো ক্লিনিকের কেউ করেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। একটি তদন্ত কমটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্ত রিপোর্ট পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, মেয়েটির মা ঢাকায় গার্মেন্টেস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে। আর তার বাবা অন্যত্র থাকে। তারা দুই বোন ও এক ভাই দীর্ঘদিন হতে নানীর বাড়িতে থাকে। মেয়েটি একটি মহিলা মাদ্রাসাতে লেখাপড়া করে।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত