ডিমলার খালিশা চাপাণী ইউনিয়নে অবস্থিত খালিশা চাপানী বেপারী টোলা আলিম মাদরাসায় গোপনে ৬ পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ছয় পদে নিয়োগ হলেও স্থানীয়রা জানে না কবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে কবেই বা নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছয় পদে যোগদান করার পরে এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।
গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। তবে কোন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হদিস মেলেনি তা নয়, কোথায় নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি।
ছয় জন নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, অধ্যক্ষ পদে মো. আব্দুল মান্নান যিনি একই প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। উপাধ্যক্ষ পদে হাফিজুর রহমান, অফিস সহকারী পদে আসাদুজ্জামান লিটন যিনি মাদরাসাটির গভর্নিং বডির সভাপতি রহমতউল্লাহ মিয়ার ছেলে। নিরাপত্তা প্রহরী পদে মো. রিমন, আয়া পদে মোছা. শামিমা, কম্পিউটার সহকারী পদে মুন্নি।
জানা গেছে, খালিশা চাপারী বেপারী টোলা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. জয়নুল আবেদীন অবসরে গেলে মাদরাসাটির উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান অতি সুকৌশলী কোনো নির্বাচন ছাড়া খাতা কলমে নির্বাচন দেখিয়ে নিজের মতো করে একটি গভর্নিং বডি গঠন করে। এই কমিটি শুধু মাত্র সভাপতি রহমতউল্লাহ মিয়ার নাম ছাড়া আর কারা কারা আছে তা এলাকাবাসী জানে না।
অতি গোপনে খাতা কলমে গভর্নিং বডি গঠন করে অধ্যক্ষ পদে নিজের নিয়োগ নিজেই নিয়েছেন উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান। গভর্নিং বডির সভাপতির ছেলেকে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দিয়ে সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন আব্দুল মান্নান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসাটির গভর্নিং বডির সভাপতি রহমতউল্লাহ মিয়ার ছেলে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ পাওয়া আসাদুজ্জামান লিটন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ মনে নেই তবে জুলাইয়ের শুরুতে হবে। নিয়োগ পরীক্ষা কোথায় হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মাদরাসাতেই হয়েছিল। একই সময়ে আপনারা কতজন নিয়োগ পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোট ছয় জন। শুরুতে তিনি তাঁর বাবা অসুস্থ আছেন এবং বাড়ির বাহিরে চলাফেরা করতে পারেন না বললেও নিয়োগ পরীক্ষার দিন নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিজের নিয়োগ নিজে নেওয়া মাদরাসাটির অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান বলেন, গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সবাই জানবে বিষয়টি এমন হবে তাও না। দুই একজন নাও জানতে পারে। তবে এলাকার অধিকাংশ মানুষ জানে। কোন পত্রিকায় এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল তার উত্তর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিমলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, বিষয়টা এভাবে বলা যাচ্ছে না কে ছিল নিয়োগ পরীক্ষায়, কবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আমাকে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। খাতা পত্র খুলে দেখতে হবে তারপর বলতে পারব। আমার মনে নেই।
জানতে চাইলে নীলফামারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি কিছুই জানেন না। জেলায় একটি নিয়োগ হলো অথচ আমি কিছুই জানি না। মাদরাসা অধিদপ্তর থেকে ডিজির প্রতিনিধি প্লেনে আসেন আবার নিয়োগ দিয়ে প্লেনে করে ফিরে যান আমরা জেলার দায়িত্ব থাকি অথচ কিছু জানি না। গোপনে নিয়োগ নেওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে খোঁজ নেওয়ার জন্য তিনি প্রতিনিধিকে বলেন।
বাবু/জেএম